—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মালদহের রতুয়ার ৩০০ বছরের পুরনো গোবরজনা কালীমাতা ঠাকুরানির পুজোর সঙ্গে আজও জড়িয়ে রয়েছে ‘দেবী চৌধুরাণীর’ নাম। কথিত আছে, কালিন্দ্রী নদীপথে বজরায় চেপে যাওয়ার সময় নদীর পারে ঘন জঙ্গলে ঘাঁটি করেছিল একদল দস্যু। ওই জঙ্গলে চালাঘরের মন্দির গড়ে প্রথম পুজো শুরু করেছিলেন ওই দস্যুদলের রানি। পরে জনবসতি গড়ে ওঠায় তারা পালিয়ে যায়।
কালী মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন যে দস্যুরানি, তিনি ‘দেবী চৌধুরাণী’ বলে এলাকার মানুষের প্রচলিত বিশ্বাস। তাই ওই পুজোকে আজও ‘দেবী চৌধুরাণীর’ প্রবর্তিত পুজো বলেই মনে করেন স্থানীয়দের পাশাপাশি জেলার বহু বাসিন্দাই।
দস্যুরা এলাকা ছেড়ে যাওয়ার পর স্বপ্নাদেশ পেয়ে স্থানীয় চৌধুরী পরিবার ওই পুজো শুরু করেন। পারিবারিক হলেও ওই পুজো সর্বজনীনতার ছোঁয়ায় সমৃদ্ধ। ওই পুজোকে ঘিরেই বড় মেলা বসে। পুজো ও মেলা সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে শতাধিক পুলিশ কর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছে।
কালিন্দ্রী নদীর ধারে আম বাগান ঘেরা গোবরজনা মন্দির এলাকায় এখনও তেমন জনবসতি নেই। দেবী প্রতিমা গড়া হয় দেড় কিলোমিটার দূরে চৌধুরী বাড়িতে। রীতি মেনে পুজোর সন্ধ্যায় দেবীকে নিয়ে মন্দিরের উদ্দেশ্যে বিরাট শোভাযাত্রা করে নিয়ে যাওয়ার সময় শূন্যে গুলি ছোড়া হয়। স্থানীয়দের কাছে দুর্গা পুজোর থেকেও বড় উৎসব গোবরজনা কালীমাতা ঠাকুরানির পুজো। পুজো শেষে ওই রাতেই কালিন্দ্রীতে দেবীমূর্তি বিসর্জন করাই রীতি। তবে মেলা চলতে থাকে তিন দিন ধরে।
চৌধুরী পরিবারের তরফে শ্যামাপদ চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা কখনই এই পুজোকে পারিবারিক পুজো বলে মনে করি না। সকলের ভালবাসায় এই পুজো এখন সর্বজনীন।’’