প্রতীকী ছবি।
সকাল থেকেই উপচে পড়া ভিড়। আনাজ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হুড়োহুড়ি। ব্যাঙ্ক-পোস্ট অফিসেও ভিড়। আজ, বুধবার থেকে টানা চারদিন কোচবিহার জেলা পূর্ণ লকডাউন। তার পরেই পড়েছে রবিবার। তাই পাঁচদিনের হিসেবে একসঙ্গে সব ঘরে তুলতে এ ভাবেই ভিড় করেছেন লোকজন। প্রশাসন জানিয়েছে, ৫ এবং ৮ জুলাই রাজ্য সরকারের ঘোষণায় লকডাউন। সেইসঙ্গেই ৬ এবং ৭ জুলাই জেলা প্রশাসনের তরফে পূর্ণ লকডাউন।
সকাল থেকে কোচবিহার শহরের ভবানীগঞ্জ বাজার, নতুন বাজার, রেলগেট বাজারে উপচে পড়েছিল ভিড়। আনাজের পাশাপাশি মুদির দোকানেও ভিড় করেছে্ন লোকজন। শহরেও ছিল অন্যদিনের তুলনায় অনেকটাই বেশি ভিড়। সাগরদিঘি পাড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখার সামনে এবং সুনীতি রোডে প্রধান ডাকঘরেও ভিড় করেছেন বাসিন্দারা। ব্যাঙ্কের সামনে দাঁড়ানো এক প্রবীণা গীতা রায় বললেন, “শনি-রবিবারের পর আজই পেনশন তোলার সুযোগ পেলাম। এর পরে তো টানা পাঁচদিন বন্ধ। তাই লাইনে দাঁড়িয়েছি।”
দিনহাটার বাজারে এবং রাস্তাতেও লোকজনের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শহরের পাঁচ মাথার মোড়ে বিভিন্ন দোকানের পাশাপাশি গোটা বাজার চত্বরে থিকথিক করছিল ভিড়। এ দিন বাজারের সামাজিক দূরত্বের কোনও বালাই ছিল না বললেই চলে। অনেকেই বাজার-মুখো হলেও ভিড়ের ভয়ে বাজার না করেই ফিরে যান। ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে বারবার আবেদন জানানো সত্ত্বেও লকডাউনের আগের দিন ভিড় দেখে অনেকেই ক্ষোভ উগরে দেন পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
লকডাউন ধোঁয়াশায় মেখলিগঞ্জের ক্রেতা-বিক্রেতাদের একটা বড় অংশ। মেখলিগঞ্জ শহরের অনেকেই জানতেনই না টানা চারদিন লকডাউন আছে। ধন্দ কাটাতে একে অপরের কাছে খোঁজ নিচ্ছেন। ধন্দ রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যেও। নিজতরফের অঞ্জলি রায়ের স্বামী বাইরে থাকেন। এ দিন তিনি এসেছিলেন ব্যাঙ্কে। লাইন দাঁড়িয়ে চারদিন লকডাউনের কথা জানতে পেরে চারদিনের জন্য আনাজ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যান। এ দিন হলদিবাড়ি বাজারে উপচে পড়ে ভিড়। সামাজিক দূরত্ব অনেকেই মানেননি বলে অভিযোগ। রেশনের দোকানেও ভিড় করেন গ্রাহকেরা।
শনিবার সকাল পর্যন্ত লোকজন টানা চারদিনের লকডাউন সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতেন না। বেলা গড়াতেই মহকুমার প্রশাসনের তরফ থেকে তুফানগঞ্জে মাইকে প্রচার করা হয়, বুধবার থেকে টানা লকডাউন শনিবার পর্যন্ত। রবিবার কিছুটা শিথিলতা থাকছে লকডাউনে। সকালে মুদিখানা, আনাজ কেনার সুযোগ পাবেন লোকজন। তা প্রচার হওয়ার পরেই ভিড় উপচে পড়ে তুফানগঞ্জের প্রতিটি বাজারে। মাথাভাঙাতেও একাধিক বাজারে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানান, প্রত্যেকেই রাজ্য সরকারের দু’দিনের লকডাউনের কথা জানতেন। আচমকা সেখানে আরও দু’দিন যোগ হওয়ার কথা অনেকেরই জানা ছিল না।