পিঠের পসরা। আলিপুরদুয়ারের পিঠেপুলি উৎসবে। ছবি: নারায়ণ দে
পৌষ সংক্রান্তিতে জাঁকিয়ে পড়ল শীত। দিনভর কার্যত কুয়াশাচ্ছন্ন থাকল কোচবিহার। বহু জায়গায় বসল পিকনিকের আসর। পিঠে-পুলি উৎসবেও মাতল অনেকে। সব মিলিয়ে রবিবার আনন্দে মাতোয়ারা হলেন কোচবিহার জেলার বাসিন্দারা।
এ দিন সকাল থেকেই তোর্সা নদীর চরে পিকনিক করতে আসেন অনেকে। অনেকে আবার কোচবিহার পেরিয়ে ডুয়ার্সের পথেও যান। ঘন কুয়াশা থাকায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবা কেন্দ্রের তরফ থেকে গাড়ি চলাচল সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবা কেন্দ্রের নোডাল অফিসার শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই সময় ঠান্ডা পড়বে। কুয়াশাও থাকবে। ফলে গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে।’’
কোচবিহারে এ বার শুরু থেকেই শীত জাঁকিয়ে পড়ে। তাপমাত্রা পাঁচ থেকে দশ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করে। এ দিন সকাল থেকেও প্রায় একই অবস্থা চলতে থাকে। কুয়াশায় ঢাকা ছিল চার দিক। তার মধ্য দিয়েই সকাল থেকে শুরু হয় পিকনিক পার্টির গাড়ির যাতায়াত।
এ দিন উত্তরবঙ্গ পিঠে পুলি উৎসবেরও আসর বসে কোচবিহারে। পৌষ পার্বণ উপলক্ষে শহরের রাজমাতা দীঘি পাড়ে ওই উৎসবের আয়োজন করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। উদ্বোধন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক রাকিবুর রহমান। উদ্যোক্তাদের তরফে রাজা বৈদ্য জানান, এ বার উৎসবের ষষ্ঠ বর্ষ। তবে এ বারই প্রথম উৎসবে পছন্দের পিঠেপুলি কেনার সুযোগ পেয়েছেন আগ্রহীরা। রবীন্দ্রনাথ জানান, আগামী বছর পুরসভার উদ্যোগে কোচবিহারে বড় মাপের পিঠেপুলি উৎসবের পরিকল্পনা হচ্ছে।
এ দিকে, নানান সুস্বাদু পিঠে নিয়ে রবিবার আলিপুরদুয়ারে অনুষ্ঠিত হল পিঠেপুলি উৎসব। পিঠেপুলি প্রতিযোগিতাতেও যোগ দিলেন অনেকে। কেউ বানিয়েছেন পাটিসাপটা বা মালপোয়া। তো কেউ দুধপুলি ও মুগেরপুলি। কেউ কেউ আবার এনেছেন ভাপা পিঠে বা রসপুলি।
গত চার বছর মকর সংক্রান্তিতে আলিপুরদুয়ারে পিঠেপুলি উৎসবের আয়োজন করে আসছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। আলিপুরদুয়ার শহরের কোর্ট রেল স্টেশনের পাশে এ দিন উৎসবের আয়োজন করা হয়। নানান স্বাদের পিঠে নিয়ে ৩২ জন মহিলা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এ ছড়াও ন’টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীও অংশ নেয়। আয়োজক সংগঠনের কর্মকর্তা অভিজিৎ সরকার বলেন, “একটা সময় মকর সংক্রান্তির দিন বাড়ি বাড়ি পিঠে বানানো হতো। কিন্তু এখন অনেক বাড়ি থেকে সেই চল উঠে গিয়েছে। তাই এই দিনটাতে পিঠেপুলি নিয়ে সকলকে উৎসাহ দিতেই এই আয়োজন।”