নদী ভাঙনে বিপন্ন দিনহাটা মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। ওই মহকুমার গীতালদহের অন্তত চারটি এলাকায় ভাঙনের জেরে উদ্বেগ বাড়ছে তাঁদের। এরমধ্যে বড়াইবাড়ির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতিপথ বদলে বুড়া ধরলা ক্রমশ পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে যাচ্ছে। তাতেই বিপন্ন হয়ে পড়ছে বিঘের পর বিঘে জমি, বসতবাড়ি। ইতিমধ্যেই বিস্তর ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। নদীভাঙনের জেরে ক্ষতির মুখে পড়েছে একটি স্কুলও। যা পরিস্থিতি তাতে গীতালদহ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই এলাকা নদীর কবলে পড়ে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারছেন না এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়াও ভোরাম পোয়েস্তির ঘোষপাড়া, জারিধরলা ও দরিবস এলাকাতেও নদী ভাঙনের সমস্যা রয়েছে।
দিনহাটার মহকুমা শাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ বলেন, “ওই সব এলাকার ভাঙনের সমস্যা সেচ দফতরের নজরে আনা হয়েছে।” পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেচ দফতরের কোচবিহারের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার স্বপন সাহা। তিনি বলেন, ‘‘সমস্যা মেটাতে জরুরি ভিত্তিতে কী করা যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
বাসিন্দাদের দাবি, কয়েক বছর থেকে বুড়া ধরলার গতি একটু একটু করে পূর্বমুখী হচ্ছিল। গত দু’মাসে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় একটি প্রাথমিক স্কুলও বিপন্ন হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে স্কুল চত্বরের পানীয় জলের টিউবওয়েল তলিয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, নতুন জায়গায় স্কুল তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, দ্রুত প্রায় এক কিমি বাঁধ তৈরি করা দরকার।
স্থানীয়দের অনেকের ঘরবাড়িও নদীতে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে রাস্তার কাছে ফাঁকা জমিতে অনেকে অস্থায়ী ভাবে বাড়ি তৈরি করে আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আলিমুদ্দিন মিঁয়া বলেন, “আমার সাত বিঘা জমি এই মরসুমে ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে।” দিনহাটা ১ ব্লকের বিডিও পার্থ চক্রবর্তী বলেন, “বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তাদের জানান হয়েছে।” একশো দিনের কাজের প্রকল্পের অধীনে পাথর, তারজালি দিয়ে ভাঙন রোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান গীতালদহ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আমিনুল হক। সেচ দফতরের তরফে অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।