এক দিকে চিকিৎসকদের অবস্থান কর্মসূচী, অন্য দিকে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসছেন রোগীরা। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: স্বরূপ সরকার।
আর জি কর কাণ্ড নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি, জুনিয়র চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তার জেরে, বহির্বিভাগে রোগীদের দুর্ভোগ চলছেই। মঙ্গলবারও বহির্বিভাগ সামলাতে হয়েছে সিনিয়র চিকিৎসকদেরই। চিকিৎসক কম থাকায় রোগীদের ভিড় ছিল বহির্বিভাগে চিকিৎসকদের ঘরের সামনে। জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন এবং তার জেরে দুর্ভোগ পোহাতে হওয়ার খবর জানাজানি হতে রোগীদের আনাগোনাও কমেছে বলে হাসপাতালের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে। অন্য সময় যেখানে সাড়ে চার হাজারের মতো রোগী প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসেন, সেখানে এ দিন আড়াই হাজারের মতো রোগী এসেছিলেন। তাতে কিছুটা চাপ কম ছিল। তবে চিকিৎসক সংখ্যা কম থাকায় লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে ফের লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসককে দেখাতে তিন, সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে অনেকের। এ দিন রাতে মেডিক্যালে বড় মিছিল বার করেন আন্দোলনকারী পিজিটি, জুনিয়র চিকিৎসক, পড়ুয়া, নার্সরা।
হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘সমস্ত বহির্বিভাগ এ দিন খোলা ছিল। সিনিয়র চিকিৎসকরাই এখন সেখানে রোগী দেখছেন। পিজিটি এবং জুনিয়র চিকিৎসকেরা আন্দোলনে থাকায় সে ভাবেই চালাতে হচ্ছে। তাতে কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করতে বা ছোটখাট সমস্যা হতে পারে।’’
আর জি করের ঘটনার পর থেকেই অন্য মেডিক্যাল কলেজের মতো উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেও আন্দোলনে নামেন জুনিয়র চিকিৎসক, পিজিটি’রা। জরুরি বিভাগের সামনে প্রতিদিনই তাদের অবস্থান আন্দোলন চলছে। শামিল হচ্ছেন পড়ুয়ারাও। আর জি করের ঘটনায় দোষীদের শাস্তি, সুবিচার, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড রাখা হয়েছে। এ দিন সন্ধ্যার পর থেকে মিছিলের প্রস্তুতি নেন তাঁরা। সেই মতো সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সুপার স্পেশালিটির সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। ১ নম্বর গেট দিয়ে এশিয়ান হাইওয়ে হয়ে মিছিল ২ নম্বর গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকে। আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের কুশপুতুল দাহ করা হয়।
আন্দোলনকারীদের তরফে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘‘আন্দোলন চলবে। তদন্তের গতিপ্রকৃতি আশানুরূপ নয়।’’ পিজিটিদের কর্মবিরতি লাগাতার চলতে থাকলে, বহির্বিভাগে রোগী পরিষেবার ক্ষেত্রে রোগীদের দুর্ভোগ বাড়বে বলেই কর্তৃপক্ষের একাংশ মনে করছেন। যদিও জরুরি পরিষেবা পিজিটি’রা দিচ্ছেন বলে জানান।