ডাক্তারবাবুর লেখা প্রেসক্রিপশনের নির্দিষ্ট ওষুধ রোগীকে না দিয়ে ভুল ওষুধ পরিবেশন করায় এক ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ। তিনি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হায়দরাবাদে চিকিৎসাধীন। বিষয়টি নিয়ে বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং তুফানগঞ্জ মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতিকে অভিযোগ দায়ের করেছে রোগীর পরিবার। রোগীর পরিবারের দাবি, ওষুধের দোকান অবশ্য পুরো অভিযোগই অস্বীকার করেছে। কী ওষুধ কেনা হয়েছে, তার ক্যাশমেমো রোগীর পরিবারের কাছে নেই।
তুফানগঞ্জ পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সম্পদলাল বোথরা সম্প্রতি জন্ডিস এবং টাইফয়েডে আক্রান্ত হন। তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতাল সংলগ্ন একটি ওষুধের দোকানে এক ডাক্তারের চেম্বারে চিকিৎসা করান ১২ আগস্ট। ওই ওষুধের দোকান থেকেই ডাক্তারের লেখা ওষুধ নেন। রোগীর পরিবারের অভিযোগ ডাক্তারবাবুর লেখা সব ওষুধ দোকান থেকে দিলেও একটি ওষুধ পাল্টে দিয়েছেন দোকানদার। দোকানের মালিকের বক্তব্য, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’
রোগীর ছেলে পবন বোথরার অভিযোগ, ‘‘ডাক্তার লিখেছেন ফলভাইট ফাইভ ওষুধ। আমাদের দেওয়া হয়েছে ফোলিট্রাক্স ফাইভ এবং দোকান থেকে ওষুধ দেওয়ার নিয়মাবলির খামে লেখা আছে রাতে খাবার পর একটি করে খেতে হবে। খামে ওষুধের নাম লিখেছে ফোলিরাম ফাইভ। সাধারণ মানুষ ডাক্তারবাবু কী লিখলেন, এতটা দেখে না ও বোঝে না। দোকান থেকে যে ওষুধ দেওয়া হয়, সেই নিয়ম দেখেই আমরা রোগীকে ওষুধ খাইয়ে থাকি। আমার বাবা তিন দিন ওষুধ খাওয়ার পর দেখি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় ডাক্তার দেখালে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে থাকে। হায়দরাবাদ নিয়ে যাওয়া হয় বাবাকে। সেখানকার ডাক্তার ওষুধ এবং প্রেসক্রিপশন দেখে বলেন, ডাক্তার যে ওষুধ লিখেছেন তার বদলে অন্য ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তাই শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। সব ধরনের ওষুধের খামে হাতের লেখা একই।’’
ওই ওষুধের দোকানের মালিক জানান, ‘‘আমাদের উপর ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমার দোকান থেকে ওই ওষুধ ক্রয় করা হয়নি।’’
বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের তুফানগঞ্জ শাখার সম্পাদক দীপক চন্দ জানান, ‘‘আমরা বিষয়টি নিয়ে বসেছিলাম। কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি। তবে ডাক্তারবাবুরদের হাতের লেখা পরিবর্তন দরকার আছে। সংগঠন থেকে প্রতিটি দোকানের মালিককে বলে দেওয়া আছে দোকানের সামনে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখতে ক্যাশ মোমো গ্রহণ করার জন্য। ক্রেতা যেন সেটা গ্রহণ করে।’’ তুফানগঞ্জ মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অশোক দে জানান, ‘‘অভিযোগ জমা পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বসবো। প্রশাসনের কাছে আমরা দাবি জানাই প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।’’