ফের দেখা পার্থ-পরেশের, কোলাকুলিও

পার্থকে সরিয়ে এ বার পরেশকে টিকিট দিয়েছিল দল। ভোটে শেষপর্যন্ত পরেশ হেরে যান। দলের একাংশ জানান, ভোটে হার নিয়ে তৃণমূলের অন্দরের কোন্দল চরম আকার নিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৫৬
Share:

কাছে-দূরে: একই অনুষ্ঠানে পার্থ এবং পরেশ। নিজস্ব চিত্র

অবশেষে দেখা হল দু’জনার। মৃদু হেসে হাত মেলালেন, হল কোলাকুলিও। তারপরে অল্প কিছু কথায় সেরে নিলেন আলাপচারিতা। একজন, তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। আর একজন, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসনের তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারী।

Advertisement

পার্থকে সরিয়ে এ বার পরেশকে টিকিট দিয়েছিল দল। ভোটে শেষপর্যন্ত পরেশ হেরে যান। দলের একাংশ জানান, ভোটে হার নিয়ে তৃণমূলের অন্দরের কোন্দল চরম আকার নিয়েছিল। দলের একটি সূত্রের দাবি, দু’জনের মুখ দেখাদেখিও বন্ধ ছিল। যদিও এ দিন পার্থ বলেন, “তেমন কোনও বিষয় নেই। পরেশবাবুর সঙ্গে কখনই সম্পর্ক খারাপ ছিল না। সবাই মিলে চেষ্টা করার পরে তিনি কিছু ভোটে হেরে যান। তাঁর সঙ্গে এ দিন দেখা হয়। কথাও হয়।” পরেশও বলেন, “কারও সঙ্গে কোনও বিরোধ নেই। সবাই মিলেই একসঙ্গে লড়ছি।’’

সোমবার বিকেলে কোচবিহার জেলা পুলিশের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে জেলার সমস্ত মন্ত্রী-বিধায়ক, বিভিন্ন সংস্থার চেয়ারম্যানদের আমন্ত্রণ ছিল। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রায় সকলেই। একই মঞ্চে ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, বিধায়ক মিহির গোস্বামী। সেই মঞ্চেই ছিলেন পরেশ আর পার্থ। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁদের। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে বিধায়ক-মন্ত্রী থেকে পুলিশ আধিকারিক সবাই কোলাকুলিতে মাতেন। তখনই পার্থ ও পরেশ নিজেদের মধ্যে কোলাকুলি করেন। সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার জেলা পরিষদের পূর্ত বিভাগের কর্মাধক্ষ্য আব্দুল জলিল আহমেদ। তাঁর সঙ্গেও সবাই বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আব্দুল জলিল বলেন, “সবাই যেমন বলার চেষ্টা করে বিষয়টি তেমন নয়। সবার সঙ্গে সবার সম্পর্ক রয়েছে।”

Advertisement

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসনে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী রেণুকা সিংহ। অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। এরপরে ২০১৬ সালের উপনির্বাচনে কোচবিহার থেকে জেতেন তৃণমূলের পার্থপ্রতিম রায়। আড়াই বছরের মেয়াদে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তৃণমূলের সেই সময়ের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের। এ বারে দল পার্থকে আর টিকিট দেয়নি। তা দেওয়া হয় রবীন্দ্রনাথ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পরেশ অধিকারীকে। তা নিয়ে পার্থর অনুগামীরা তীব্র বিরোধিতা শুরু করেন। সেই সময় পার্থ দলের যুব সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন। যুবর একটি অংশ পরেশের বিরুদ্ধে মাঠে নামে বলে অভিযোগ ওঠে। অবশ্য পরেশের হয়েই প্রকাশ্যে প্রচার করতে দেখা গিয়েছিল পার্থকে। ভোটে ৫৪ হাজারের কিছু বেশি ভোটে বিজেপি প্রার্থীর কাছে হেরে যান পরেশ। তারপরে দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়। তৃণমূলে যাঁরা মূলত রবীন্দ্রনাথ বিরোধী বলে পরিচিত তাঁরা পরেশের বিরুদ্ধে সরব হন। এই অবস্থায় এ বারই প্রথম পার্থ ও পরেশের দেখা হল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, “এখনও যদি সবাই এক না হয়ে চলতে পারেন তাহলে আগামীদিনে সংগঠন আরও ভেঙে পড়বে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement