পাহাড়ে কি নাগা চক্রীরা, সন্দেহ

গত রবিবার রাতে লেবং ভ্যালিতে একটি বিস্ফোরক কারখানার হদিস পায় পুলিশ। দুটি ঘর থেকে জিলটেন স্টিক, কার্তুজ, একাধিক তার ও বিস্ফোরণ সামগ্রী উদ্ধার হয়।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:২৬
Share:

উদ্ধার: লেবংয়ে মিলল বোমা তৈরির সামগ্রী। ফাইল চিত্র

পাহাড় জুড়ে পরপর বিস্ফোরণে পিছনে উত্তর পূর্বাঞ্চলের নাগাল্যান্ডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৪ জন যুবকের হাত রয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে পুলিশের সন্দেহ। দলটির সদস্যদের খোঁজে দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু হয়েছে।

Advertisement

গত রবিবার রাতে লেবং ভ্যালিতে একটি বিস্ফোরক কারখানার হদিস পায় পুলিশ। দুটি ঘর থেকে জিলটেন স্টিক, কার্তুজ, একাধিক তার ও বিস্ফোরণ সামগ্রী উদ্ধার হয়। তিনজনকে ধরা হলেও মূল অভিযুক্তকে পুলিশ এখনও পায়নি। তদন্তে নেমে কয়েকজন যুবকের নাম পুলিশ জানতে পারে, যা খতিয়ে দেখার পর চমকে উঠেন অফিসারেরা। সেই নামগুলি থেকেই বিস্ফোরণের সঙ্গে উত্তর পূর্বাঞ্চলের যোগ আরও মজবুত হয় বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

২০১৪ সালে অসমের চিরাং জেলায় সেনাবাহিনীর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ দু’জন ধরা পড়েন। তাদের মধ্যে উমেশ কামি নামের পাহাড়ের জিএলপি স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন। তাদের জেরা করে পুলিশ, সিআইডি সেই সময় জানতে পারে, ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে চারমাস নাগাল্যান্ডে ‘এনএসসিএন-আইএম’ ক্যাম্পে পাহাড়ের ১৪ জনের অস্ত্র প্রশিক্ষণ হয়েছে। তাদের নাম ও ঠিকানা মিললেও আজও তাদের ধরা যায়নি। ওই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকেরাই বর্তমানে পাহাড়ে নানা বিস্ফোরণের পিছনে রয়েছে বলেই পুলিশের অনুমান। ২০১৪ সালেই ২৭ মাইল থেকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের অস্ত্র উদ্ধারের সঙ্গে নাম জড়ায় জিটিএ সদস্য সঞ্জয় থুলুং-এর। প্রায় তিন বছর আত্মগোপনের পর গত সপ্তাহে পাহাড়ের গোপন ঘাঁটি থেকে তাঁদের একাংশ সংবাদমাধ্যমে কথা বলেন।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে মিরিক বাজারের একট দোকানের সামনে থেকে হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার হয়েছে। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদী বলেন, ‘‘অত্যন্ত দক্ষহাতে আইইডিগুলি তৈরি করা হচ্ছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রশিক্ষণপ্রাপ্তেরা এ সবের পিছনে রয়েছে বলে তথ্য আসছে।’’ আর কালিম্পঙের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট কি‌ছু লোকজনের খোঁজ চলছে।’’

অগস্ট মাসে দার্জিলিং সদর থানার সামনে মোটর স্ট্যান্ডে, কালিম্পং থানা, সুখিয়াপোখরি থানা, লোধামা, পেশক সেতু, তাকদা পুলিশ ফাঁড়ি এবং ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে বিস্ফোরণ হয়েছে। কালিম্পঙে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি তদন্তে নেমে সিআইডিও।

তদন্তকারীরা জানান, পাহাড়ের সঙ্গে নাগাল্যাল্ডের যোগাযোগ নতুন নয়। ২০০০ সালে কালিম্পঙের জঙ্গলে নাগা জঙ্গি প্রশিক্ষণ ঘাঁটির সন্ধান মিলেছিল। পরের বছরই, কাশিয়াঙের পাঙ্খাবাড়ি রোডে সুবাস ঘিসিঙ্গের কনভয়ের উপর হামলায় নাম জড়ায় নাগা জঙ্গিদের। পরবর্তীতে, ঘটনার মূলচক্রী ছত্রে সুব্বাকে নেপাল সীমান্ত থেকে ধরা হয়। তিনিই উত্তর পূর্বাঞ্চল থেকে প্রশিক্ষিত যুবকদের এনেছিলেন বলে পুলিশ জানায়। সেই নাগা যোগ ফের পাহাড়ে ছড়িয়েছে কি না তাই ভাবাচ্ছে এখন পুলিশকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement