দল টিকিট না দেওয়ায় নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাদের অনেকেই। পুরাতন মালদহ পুরসভায় এবার সে পথে হাঁটলেন বিজেপির অনেক বিক্ষুব্ধ কর্মীও। দলের নেতাদের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তুলে সাইকেল প্রতীক নিয়ে জোরকদমে প্রচার শুরু করলেন তাঁরা।
এঁদের অভিযোগ, সারা ক্ষণের কর্মীদের টিকিট না দিয়ে অন্য দল ছেড়ে যারা আসা কর্মীদের প্রাধান্য দিচ্ছে দল। পুরাতন মালদহ পুরসভায় পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি বশিষ্ঠ ত্রিবেদী-সহ পাঁচ কর্মী নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। দলের জেলা সভাপতির অনুরোেধও অবস্থানে অনড় থেকেছেন তাঁরা। বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের পথেই হেঁটে এই পুরসভায় ২ নম্বর ওর্য়াডে অমিত সরকার ও ১১ নম্বর ওর্য়াডের অষ্টমী ঘোষ নামে দুই বিজেপি কর্মী নির্দল হয়ে লড়ছেন। সাইকেল প্রতীকে ইতিমধ্যেই প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। পুরাতন মালদহের বিজেপির ব্লক সভাপতি গোপাল সাহা অর্থের বিনিময়ে টিকিট বিক্রি করেছেন বলে সরাসরি অভিযোগও করেন অমিত বাবু। তিনি বলেন, ‘‘২ ও ১১ নম্বর ওর্য়াড থেকে বিজেপি যে প্রার্থী দিয়েছে তারা সিপিএমের। দুই জনই ১৫দিন আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। অথচ দল তাঁদের টিকিট দিয়েছে। সর্বক্ষণ দলের হয়ে কাজ করা সত্ত্বেও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই দেখি সিপিএম ছেড়ে আসা নেতাদের তারা প্রার্থী করেছে। বিজেপির ব্লক নেতারা বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অর্থের বিনিময়ে ওদের প্রার্থী করেছে।’’ আরেক বিক্ষুব্ধ কর্মী অষ্টমী দেবী বলেন, ‘‘আমরা প্রার্থী হিসেবে এলাকায় ঘুরতে শুরু করেছিলাম। পরে দেখি অন্যদের প্রার্থী করা হয়েছে। বিজেপি নেতারা বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন।’’
বিজেপির ব্লক সভাপতি অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গোপাল বাবু বলেন,‘‘ টাকা নিয়ে টিকিট দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। দল যাকে মনে করেছে, তাঁকে টিকিট দিয়েছে। আর যারা টিকিট পান নি তাঁরা নির্দল থেকে দাঁড়িয়েছেন। তারা দলের কর্মী নন।’’ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ দুই পুরসভাতেই ক্ষোভের আঁচ টের পেয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। ওয়ার্ড কমিটি প্রার্থীদের নামের তালিকাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে প্রার্থী করেছেন নেতারা, এমন অভিযোগে ইংরেজবাজার পুরসভার ১১ নম্বর ওর্য়াড কমিটির ১৪ জন সদস্য গণ ইস্তফা দেন। পুরভোটের মুখে দুই শহরে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা নেতৃত্ব। বিজেপির জেলা সভাপতি শিবেন্দু শেখর রায় বলেন, ‘‘যাঁরা যোগ্য তাঁদেরই প্রার্থী করা হয়েছে। আমাদের দলে কোন বিভেদ নেই। আমরা দুই পুরসভাতেই ভালো ফল করব।’’