প্রতীকী ছবি।
বামেদের ডাকা ৬ ঘণ্টার ধর্মঘট উপেক্ষা করে পুরোপুরি স্বাভাবিক রইল উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতল। সকাল ১০টাতেই বালুরঘাট, কোচবিহার, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ির ফুটপাত, দোকান-বাজারে দেখা গেল ‘চৈত্র সেল’-এর ভিড়। জলপাইগুড়ির কদমতলা থেকে রায়গঞ্জের উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের ডিপো, সর্বত্রই ভিড়। এখনও বামেদের হাতে থাকা শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৭টি ওয়ার্ডের চেহারা ছিল আর পাঁচটা দিনের মতো। আর পাঁচটা বন্ধে যেমন পুলিশকে উদ্বিগ্ন হয়ে শহরের ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়, এ বার তেমন ছবিও ছিল না।
তবুও ‘প্রতীকী বন্ধ’ সফল বলে মনে করেন বামেরা। ঘটনাচক্রে, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এ দিন শিলিগুড়িতেই ছিলেন। তিনি হিলকার্ট রোডে একটি মিছিলে অংশ নিয়েছেন। মিছিলের পাশ দিয়েছে যানবাহন। যান চলাচলের গতি মিছিলের জন্য সে ভাবে থমকায়নি। বরং ব্যবসায়ী, নিত্যযাত্রীদের অনেকে নববর্ষের মুখে এমন বন্ধের মানে কী, সেই প্রশ্ন তুলে কটাক্ষও করেছেন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, ‘‘সামনে নববর্ষ। লোকের সুবিধে-অসুবিধের কথা মাথায় রেখেই তো প্রতীকী বন্ধ করা হয়েছে।’’
চা বলয়েও সকাল থেকে কাজ হয়। ওদলাবাড়ির চা শ্রমিক সোমরা ওঁরাও, শুনারি মিনজরা জানান, আগের রাতে কয়েক জন ধর্মঘটের প্রচারে গেলে তাঁদের বাগানের শ্রমিকরা আপত্তি করেন। আলিপুরদুয়ারে সব চা বাগান খোলা ছিল৷ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবিটা ছিল আর পাঁচটা ব্যস্ত দিনের মতোই। ট্রেন চলাচলেও প্রভাব পড়েনি। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বন্ধের রাজনীতিতে মানুষ বিশ্বাস করেন না।’’
যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বাস মালিক সমিতি, এনবিএসটিএসি কর্তৃপক্ষ, পুলিশ প্রতিনিধিদের নিয়ে আগাম বৈঠক করে প্রশাসন। বন্ধের সমর্থনে এ দিন কোচবিহার শহরে মিছিল করে বামেরা। আইএনটিটিইউসি’ও বন্ধের বিরোধিতায় পাল্টা মিছিল করে। এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান মিহির গোস্বামী বলেন, “ছ’শো বাস রাস্তায় নেমেছে।’’ আর পাঁচ দিনের মতো ভিড় দেখে শিলিগু়ড়ির পথচারীর মন্তব্য, ‘‘এর চেয়ে তো কাল হাইকোর্টের নির্দেশের পরেই বন্ধ তুলে নিতে পারত ওরা। তা হলে মুখ পুড়ত না।’’