উত্তরবঙ্গে বন্‌ধে ছাড় পর্যটনকে

পুরভোটে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ডাকা বনধের আওতা থেকে উত্তরবঙ্গের পর্যটনকে ছাড় দিল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন। বিজেপির কাছেও একইভাবে ছাড়ের আবেদন জানান উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে জেলা বিজেপি তরফে অবশ্য রাত অবধি এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি। শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস এবং মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা দাবিতে আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যে ২৪ ঘন্টার বনধ ডেকেছে সিটু-সহ বিজেপি। পরে তাতে যোগ দেন কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসিও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১৬
Share:

পুরভোটে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ডাকা বনধের আওতা থেকে উত্তরবঙ্গের পর্যটনকে ছাড় দিল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন। বিজেপির কাছেও একইভাবে ছাড়ের আবেদন জানান উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে জেলা বিজেপি তরফে অবশ্য রাত অবধি এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি। শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস এবং মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা দাবিতে আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যে ২৪ ঘন্টার বনধ ডেকেছে সিটু-সহ বিজেপি। পরে তাতে যোগ দেন কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসিও।

Advertisement

এতে দিনভর পর্যটকেরা সমস্যার পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করে ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের (এতোয়া) প্রতিনিধিরা। তাঁরা দার্জিলিং বামফ্রন্টের আহ্বায়ক, সিপিএমের জেলা সম্পাদক, বিজেপির জেলা সভাপতি এবং আইএনটিইউসির জেলা সভাপতিকে চিঠি দিয়ে পর্যটনকে বনধের বাইরের রাখার আবেদন জানানো হয়। বামেদের তরফে কিছুক্ষণের মধ্যেই আবেদনে সাড়া দিয়ে জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক ভট্টাচার্য জানিয়ে দেন, আমরা সিটু-সহ সব কর্মী সমর্থকদের পর্যটকদের সর্বত্র ছাড় দেওয়া কথা বলেছি। এমনিতেই, ঝড়-বৃষ্টি, ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটছে। আর বহু দেশ বিদেশের পযর্টক এলাকায় আছেন বলে শুনেছি। এই অবস্থায় তাঁদের গতিবিধি স্বাভাবিক রাখাটাই বাঞ্ছনীয়।

এতোয়ার সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘদিন ধরেই পর্যটনকে বনধের আওতা থেকে ছাড় দেওয়ার দাবি আসছি। এদিন সকালে আমরা বনধ সমর্থনকারী দলগুলির সঙ্গে দেখা করে তাঁদেরকে চিঠি দিয়ে একই অনুরোধ করি। অধিকাংশই তাতে সাড়া দিয়েছেন। এই অঞ্চলের পর্যটন বিকাশে এটা খুবই ভাল লক্ষণ।’’

Advertisement

মার্চ মাসে গরমের মরশুম শুরু হওয়ার পর এপ্রিল থেকে জুন অবধি ভরা পর্যটন মরশুম চলে। ডুয়ার্স, পাহাড়, সিকিএম এবং ভুটানে এই সময় রোজ সাধারণত ২৫-৩০ হাজার পর্যটক থাকেন। তবে এবার পরপর কয়েকদিন ভূমিকম্পের জেরে পর্যটনে কিছুটা ভাটা রয়েছে। বেশ কিছু পযর্টক ইতিমধ্যে বুকিং বাতিল করেছেন। তাও পর্যটন ব্যবাসায়ীদের হিসাব অনুসারে, ১৫ হাজারের মত পযর্টক রোড বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছেন। প্রতিদিন ট্রেনে, বাসে এবং বিমানে এলাকায় আসছেন। আবার ফিরে যাচ্ছেন। পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, বনধ বা ধর্মঘট হলে, সকাল থেকে সমস্যার পড়তে হয়।

বহু জায়গায় গাড়ি থামানো বা যেতে না দেওয়ারও অভিজ্ঞতা রয়েছে। এতে ট্রেন বা বিমান ধরতে গিয়ে পযর্টকেরা বেশি সমস্যায় পড়ে যান। বনধ সমর্থনকারী আইএনটিউসি-র জেলা সভাপতি বিজয় নাথ বলেন, ‘‘আমরাও চাই পর্যটকেরা স্বাভাবিকভাবে এলাকায় ঘোরাফেরা করুক। এতোয়ার সদস্যদের আমরা পযর্টকদের গাড়িতে স্টিকার সেঁটে দিতে বলেছি। এতে আমাদের কর্মী, সমর্থকদেরও সুবিধা হবে।’’

এদিন দুপুরে এতোয়ার সদস্যরা বাম, কংগ্রেসের নেতাদের ছাড়াও বিজেপির সঙ্গেও যোগাযোগ করেন। দলের জেলা সভাপতি রথীন বসু বাইরে থাকায় তাঁরা তাঁকে চিঠি দিতে না পারলেও টেলিফোন কথা বলেন। রথীনবাবু বিষয়টি দেখবেন বলেও তাঁদের আশ্বাস দেন। তবে দলের নিয়ম অনুসারে, জেলা কমিটি আলোচনা পরেই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। রথীনবাবু বলেন, ‘‘আমি একটু বাইরে আছি। দলের পদাধিকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে এখনই কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারছি না।’’

পযর্টন ব্যবসায়ীদের অবশ্য আশা, উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় বিজেপির থেকে বাম এবং কংগ্রেসের শক্তিই বেশি রয়েছে। তাঁদের কর্মীরাই মূলত রাস্তায় নামবেন।

আর এই দুটি বড় দল দাবিকে মেনে নেওয়ায় পযর্টকদের সমস্যা হবে বলে মনে হচ্ছে। এরই মধ্যে বাগডোগরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের জানানো হয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকে বিমানবন্দরটি খুলে দেওয়া হবে। সি‌আইএসএফকেও বলা হয়েছে।

শৌচালয়, রেস্তোঁরাগুলি সাত সকাল থেকেই খোলা থাকবে। এতোয়ার কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘এদিন রাজনৈতিক দলগুলি খুবই সদর্থক ভূমিকা নিয়েছে। তবে আমরা চাই, প্রতিটি বনধে কোনও আলাদা আলাদা করে ব্যবস্থা নয়, এই অঞ্চলে জরুরি পরিষেবার মত পর্যটনকে সবসময়ই বনধ, ধর্মঘটের বাইরে রাখা হোক।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement