ফাঁকা পক্ষিনিবাস। গোটা পুজোর মরসুমে সে রকম ভিড় হয়নি। এই ঘটনায় হতাশ রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষিনিবাস সংলগ্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা।
তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর দুর্গাপুজোর শুরু থেকে কালীপুজো পর্যন্ত পরিযায়ীদের দেখতে পক্ষিনিবাসে ভিড় জমান ২০ হাজারেরও বেশি পর্যটক। তারমধ্যে বেশির ভাগ কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। বাকিরা বিহার-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে বেড়াতে আসেন। স্থানীয়রা জানান, পুজোর মরসুমে অনেক পর্যটক দার্জিলিং ও সিকিমে বেড়াতে যাওয়ার অথবা ফেরার পথে কয়েক দিনের জন্য রায়গঞ্জ শহরে থেকে পক্ষিনিবাস ঘুরে দেখেন। যে ছবি এ বছর দেখা যায়নি। এ বার জেলারই হাতে গোনা কিছু পর্যটক পক্ষিনিবাসে বেড়াতে আসছেন।
কেনও এই অবস্থা? রায়গঞ্জের বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বিপর্ণ দত্তর যুক্তি, ‘‘সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুর-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। তখন প্রায় দু’সপ্তাহ পক্ষিনিবাস জলের তলায় ছিল।’’ বন্যায় পক্ষিনিবাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ধারণার জেরেই পর্যটকদের ভিড় নেই বলে মনে করছেন তিনি।
রায়গঞ্জ পিপল ফর অ্যানিম্যালের সভাপতি ভীমনারায়ণ মিত্রের অবশ্য দাবি, পাহাড়ে ফের নতুন করে অশান্তি ও গোলমালের আশঙ্কায় এই বছর পুজোর মরসুমে পর্যটকরা দার্জিলিং ও সিকিম থেকে মুখ ফিরিয়েছে। তারই প্রভাবে রায়গঞ্জে পক্ষিনিবাসেও পর্যটকদের ভিড় নেই বলে তাঁর দাবি।
প্রতিবছর জুন ও জুলাই মাসে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, অসম-সহ দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ওপেন বিলস্টক, নাইটহেরন, করমোন্যান্ট, ইগ্রেট-সহ বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি পক্ষিনিবাসে আসে। প্রজননের পরে ছানারা উড়তে শিখলে ডিসেম্বর মাসে তারা ফিরে যায়।
পক্ষিনিবাসকে ঘিরে গ়়ড়ে ওঠা পর্যটনকে কেন্দ্র করে সংলগ্ন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বহু হোটেল ও বিভিন্ন খাবারের দোকান হয়েছে। এমনই খাবারের দোকানের ব্যবসায়ী রবি ঘোষ ও শম্ভু ঘোষ। তাঁরা জানান, পুজোর ছুটি চলাকালীন প্রতিবছরই পক্ষিনিবাসে বাইরের পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু এ বছর ভিড় না থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীগের রোজগারে ধাক্কা লাগল বলেই তাঁরা জানান।