নিশীথ প্রামাণিক।
অসমের নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ যাওয়া কোচবিহারের মেয়েদের কোনও অসুবিধে হবে না বলে দাবি করলেন বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। বৃহস্পতিবার দলের কোচবিহার জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করেন নিশীথ। সেখানেই তিনি বলেন, “ওই মহিলাদের কোনও অসুবিধে হবে না। যাঁদের সঠিক প্রমাণপত্র আছে বা জমা দিয়েছিলেন তাঁরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সাহায্য করব।”
কিছুদিন ধরেই এনআরসি নিয়ে জেলা রাজনীতিতে কার্যত ব্যাকফুটে যেতে হয়েছে বিজেপিকে। তার মধ্যে একের এক মৃত্যুতে এনআরসি’র নাম জড়িতে যাওয়ায় তেড়ে বিজেপিকে আক্রমণে নেমেছে তৃণমূল। এই অবস্থায় পাল্টা তৃণমূলকে আক্রমণের পথেই গিয়েছে বিজেপি। এ দিন বিজেপি সভানেত্রী মালতী রাভাকে পাশে বসিয়ে নিয়ে নিজেদের মত তুলে ধরেন নিশীথ। তাঁরা এনআরসি আতঙ্ক তৈরি’র অভিযোগ পাল্টা তোলেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এনআরসি নিয়ে মৃত্যুর ঘটনা নিয়েও তিনি তৃণমূলকে দোষারোপ করেন। দাবি করেন, যে কোনও মৃত্যুই এনআরসি’র নাম দেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল। ওই মৃত্যুতে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়ে তৃণমূল নেত্রী বাসিন্দাদের আত্মহত্যায় প্ররোচণা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ তোলেন তাঁরা। ভোটার কার্ড যাচাইয়ের সঙ্গে এনআরসি’র সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন তিনি। সেই সঙ্গে দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি’র দাবি প্রথম করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসি যে তাঁরাও চান সে কথাও জানিয়ে দেন নিশীথ। তিনি বলেন, “যারা মুসলিম অনুপ্রবেশকারী তাঁদের জন্যেই এনআরসি প্রয়োজন। প্রচুর রোহিঙ্গা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছেন।”
বিজেপি’র একটি অংশ অবশ্য মনে করছে, বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ রাজ্যেও এনআরসির পক্ষে জোর সওয়াল করেছেন। অসমে ১২ লক্ষ হিন্দুর নাম বাদ পড়েছে, যার অধিকাংশই বাঙালি। কোচবিহারের সঙ্গে অসমের যোগাযোগ থাকায় মানুষ সহজেই সেখানকার অবস্থা জানতে পারছেন। তাই বিজেপির অনেকে মনে করছেন, এনআরসি নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা না দিলে বিজেপি বিরোধী মনোভাব বাড়তে থাকবে।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যে বারে বারে এনআরসি করে মানুষকে দেশ ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছেন। মানুষ কাজকর্ম বাদ দিয়ে পুরনো নথি সংগ্রহে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। অনেকেই আতঙ্কে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে মানুষই রুখে দাঁড়াচ্ছেন।”