আলতাফের সঙ্গে কথা প্রতিনিধি দলের। নিজস্ব চিত্র
হেরিটেজ রক্ষায় নতুন প্রজন্মের আগ্রহ বাড়াতে স্কুলে ছোটদের জন্য কোচবিহারের ‘ঐতিহ্যের পাঠ্যক্রম’ চালুর বিষয়ে জোর দিচ্ছেন আইআইটি খড়গপুরের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। শুক্রবার কোচবিহার শহরকে হেরিটেজ ঘোষণার ব্যাপারে পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে শহরে আসেন তারা। শনিবার সার্কিট হাউসে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব, জেলাশাসক কৌশিক সাহা সহ প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে ওই সদস্যদের বৈঠক হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকে পাঠ্যক্রম চালুর প্রসঙ্গ ওঠে। রাজ্য সরকারকে প্রস্তাব দেওয়া হবে বলেও এ দিন জানিয়েছেন তারা।
খড়গপুরের ওই প্রতিনিধি দলের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগের প্রধান সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নতুন প্রজন্মের ঐতিহ্যের প্রতি টান বাড়ান দরকার। তাই ছোটদের জন্য ঐতিহ্যের পাঠক্রম চালুর প্রস্তাব রাখা হবে।” ওই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, সাগরদিঘি চত্বরে ছোটরা যাতে নির্দিষ্ট দিনে তাদেঁর মত করে বেড়াতে, মজা করতে পারে তেমন পরিবেশও গড়ে তোলা দরকার। দলের সদস্য হৈমন্তী বন্দোপাধ্যায় বলেন, “বুঝতে শেখার সময় থেকেই পাঠ্যক্রম চালুর বিষয়টি প্রস্তাবে রাখতে চাইছি।” পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব ওই ব্যাপারে বলেছেন, “এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।”
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, কয়েকমাস আগে জেলা সফরে এসে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় কোচবিহার শহরকে হেরিটেজ ঘোষণার জন্য সওয়াল করেন। তারপরেই জুলাইয়ে খড়্গপুরের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগের সদস্যরা পরিকাঠামো দেখতে কোচবিহারে এসেছিলেন। সেসময় তারা জানিয়ে দেন, হেরিটেজ হওয়ার উপাদান কোচবিহারে রয়েছে। ওই বিষয়ে বিশদে খোঁজখবর নিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্যই ওই প্রতিনিধি দলের এ বারের জেলা সফর। এক কর্তার কথায়, হেরিটেজ ঘোষণার আগে সেখানকার স্থাপত্য, ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব নির্দশন দেখার পাশাপাশি কী কী উৎসব হয় সবকিছুই খতিয়ে দেখতে হয়। শনিবার উদ্বোধনের রাতে তারা রাস উৎসব, মেলা চত্বর ঘুরে দেখেন। রাসচক্রের নির্মাতা হরিণচওড়া এলাকার আলতাফ মিঁয়ার সঙ্গেও কথা বলেন ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, আলতাফের সঙ্গে রাসচক্রের মডেল তৈরি নিয়ে নানা বিষয়ে প্রতিনিধিরা কথা বলেন। পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতেও কোচবিহারের ইতিহাস তুলে ধরার ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পুরনো বাড়ির রঙ পরিবর্তিন না করা নিয়েও কথা হয়েছে।
এ দিন কোচবিহারের রাজবাড়ি, মধুপুরধাম ঘুরে দেখেন পর্যটন মন্ত্রী। রাজবাড়িকে সামনে রেখে নানা প্রকল্প তৈরির পাশাপাশি সাগরদিঘি পাড়ে ঘোড়ার গাড়িতে বেড়ান ও দিঘি চত্বরে ফ্রি ওয়াইফাই জোন তৈরি, শহরে নির্দিষ্ট রুটে দোতলা বাস চালু সবকিছুর উপরেই জোর দেন তিনি।
গৌতম দেব জানান, অসম সরকারের আওতাধীন মধুপুর ধামের উন্নয়নে ওই রাজ্যের সরকার আর্থিক বরাদ্দের ব্যবস্থা করলে যুব আবাস, রাস্তাও করা হবে বলে জানান তিনি।