আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের পক্ষে যে রাজ্যের সর্বত্র প্রার্থী দেওয়া সম্ভব নয়, কার্যত তা স্বীকারই করে নিলেন দলের এ রাজ্যের শীর্ষ নেতারা৷ শনিবার জলপাইগুড়ির বাতাবাড়িতে প্রকাশ্য সমাবেশে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা পলিটব্যুরোর সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছেন, আগামী পঞ্চায়েত ভোটে যেখানে সিপিএম বা বামফ্রন্ট প্রার্থী দিতে পারবে না, সেখানে তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী শক্তিকে তাঁরা সমর্থন করবেন।
এর আগে ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের সময়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছিল সিপিএম। তখন সিপিএমের মূল মুখ ছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। সেই ভোটে সিপিএম মোটে ২৬টি আসন পায়। সংখ্যাতত্ত্বের হিসেবেও দেখা গিয়েছে, ২০১১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দিন কে দিন তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার কমছে। এ দিন সূর্যবাবুর কথা শোনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি সিপিএমের এখন এমন হাল যে, সব পঞ্চায়েতে তারা প্রার্থীই দিয়ে উঠতে পারবে না? সেই আশঙ্কা থেকেই কি এ দিন এমন কথা বলেছেন সূর্যবাবু?
কী বলেছেন সূর্য? শনিবার চালসায় শুরু হয়েছে সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্মেলন। সেখানে বাতাবাড়ি ফুটবল মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশে এ দিন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘আগামী পঞ্চায়েত ভোটে যেখানে আমাদের দলের কিংবা সহযোগীদের (অর্থাৎ বামফ্রন্টের) শক্তি নেই, সেখানে যে সাহস নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করবে, আমরা তাদের আমরা মদত দেব। সমর্থন করব৷”
অনেকেই বলছেন, একক ভাবে তো নয়ই, এমনকী বামফ্রন্টগত ভাবেও যে তাদের পক্ষে পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের সর্বত্র প্রার্থী দেওয়া সম্ভব নয়, বাতাবাড়ির সমাবেশে সেটাই কার্যত মেনে নিয়েছেন সূর্য৷ সিপিএমের এক জেলা নেতার কথায়, সূর্যবাবু যা বলেছেন, সেটা বাস্তবসম্মত৷ তৃণমূলের সন্ত্রাসের ফলে অনেক জায়গায় কর্মীরা ঘরছাড়া। অনেক জায়গায় তাঁরা প্রকাশ্যে ঝান্ডা হাতে নিতেও ভয় পাচ্ছেন।
যদিও সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। এক জেলা তৃণমূল নেতার কথায়, পঞ্চায়েতের সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো লোক পাচ্ছে না সিপিএম। সেটা যেমন জলপাইগুড়িতে সত্যি, তেমনই গোটা রাজ্যেও। তাই এখন অন্যদের সাহায্য চাইতে হচ্ছে।