প্রতীকী চিত্র।
৯০০ কোটি টাকা খরচ করে জলপাইগুড়ি থেকে মাটির নীচে পাইপলাইন বসিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাস নিয়ে যাওয়া হবে গ্যাংটকে। জলপাইগুড়ি জেলায় প্রায় ৫৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসবে লাইন। মালবাজার হয়ে কালিম্পং ছুঁয়ে পাইপলাইন যাবে সিকিমের রাজধানীতে। সে জন্য জলপাইগুড়ি জেলাতেই প্রায় চার হাজার বাসিন্দার কাছ থেকে জমি ব্যবহারের অনুমতি নিতে হবে, দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। সড়ক তৈরি হোক বা প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপ বসানো— জমি নিয়ে বার বার জট দেখা গিয়েছে জেলায়। এমনকি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মালবাজারের প্রস্তাবিত সরকারি আবাস তৈরিতেও জমি নিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছে প্রশাসন। সে সব অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এই বড় প্রকল্পের জন্য জমি নেওয়ার ক্ষেত্রে আগেই জমির মালিকদের শুনানিতে ডাকছে জেলা প্রশাসন। আপাতত জমি সমীক্ষার কাজ চলছে।
জলপাইগুড়িতে এরই মধ্যে মাটির নীচে পাইপ বসানোর কাজ হয়েছে। গুয়াহাটি থেকে বারাউনি পর্যন্ত এই পাইপলাইন বসেছে। রাজগঞ্জ থেকে জলপাইগুড়ি শহর ছুঁয়ে ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি দিয়ে এই লাইন গিয়েছে। সব ঠিক থাকলে, আগামী বছর থেকে পাইপলাইনের মধ্যে দিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাস পাঠানো যাবে। সে সময় জেলায় বাড়ি-বাড়ি পাইপলাইন-বাহিত রান্নার গ্যাস সরবরাহ করা যাবে, যানবাহনে ভরার জন্য পাম্পও খোলা হবে জেলায়। সে প্রকল্পের কাজ করেছে ‘গেল’। এই প্রকল্প থেকেই গ্যাস নিয়ে সিকিমে পৌঁছনোর পরিকল্পনা করেছে আর একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ইন্দ্রধনুষ গ্যাস গ্রিড লিমিটে়ড’। সংস্থার চিফ ম্যানেজার অংশুমান রায় সোমবার বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে পাইপলাইন পাতার কাজ শেষ করা। জলপাইগুড়ির কাছে ময়নাগুড়ি থেকে আমরা গেল-এর পাইপ থেকে গ্যাস নিয়ে গ্যাংটকে নিয়ে যাব।” ময়নাগুড়ি থেকে মালবাজার হয়ে গরুবাথান হয়ে কালিম্পং এবং সেখান থেকে সিকিম যাবে গ্যাসের পাইপ।
জলপাইগুড়ি জেলায় এ জন্য প্রায় ২৭৩ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে জেলা প্রশাসনকে। ক্ষতিপূরণ দেবে কেন্দ্রীয় সংস্থাই, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে। প্রায় ত্রিশটি মৌজার জমিদাতাদের সঙ্গে আলোচনা থেকে সব ব্যবস্থা প্রশাসনই করবে। তিন ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় গ্যাসের পাইপলাইন পাতার জন্য। এক, জমির ক্ষতিপূরণ। এই হার জমিদাতার সঙ্গে আলোচনায় ঠিক হবে। দুই, ফসলের জন্য ক্ষতিপূরণ। তিন, গাছের ক্ষতিপূরণ। ফসলের ক্ষেত্রে প্রতি ডেসিমেলের জন্য ৯ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে স্থির হয়েছে। গাছের ক্ষেত্রে ‘কেস-টু-কেস’ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের বিশেষ ভূমি অধিগ্রহণ আধিকারিক পিনাকী সেনগুপ্ত জানান, আপাতত জমির সমীক্ষার কাজ চলছে।