তখনও জীবিত। মাটিতে লুটিেয় পড়েছে আহত হাতিটি। নিজস্ব চিত্র
বাঁচানো গেল না ট্রেনের ধাক্কায় জখম হাতিটিকে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ধুবুরিগামী ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ধাক্কা মারে হাতিটিকে। রক্তাক্ত অবস্থায় নিজেই উঠে দাঁড়িয়ে জঙ্গলে ফিরেছিল জখম মাকনা হাতিটি। বন দফতরের উদ্যোগে শুক্রবার থেকেই সেটির চিকিৎসাও শুরু হয়ে গিয়েছিল। শনিবার বিকেল পর্যন্ত দুই চিকিৎসকের উপস্থিতিতে চিকিৎসা চলে। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ যাবতীয় লড়াই শেষ হয়ে যায়। মারা যায় হাতিটি।
গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের চিকিৎসক শ্বেতা মণ্ডল ও মালবাজার ব্লক প্রাণী চিকিৎসক রতন বসু শনিবার সকাল থেকে চিকিৎসা চালালেও আশার কথা শোনাতে পারেননি। সারা শরীর জুড়ে ক্ষত থাকার পাশাপাশি একাধিক অভ্যন্তরীণ আঘাত থাকায় চিকিৎসায় দ্রুত সাড়া মেলা সম্ভব ছিল না বলেই বন দফতরের দাবি। গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, “মাকনা হাতিটি জখম হওয়ার পর থেকেই দ্রুততার সঙ্গে আমরা চিকিৎসা শুরু করি, সারাদিন চিকিৎসা চলার পর সন্ধ্যা নাগাদ হাতিটির মৃত্যুর খবর এসেছে।”
শনিবার ডায়না রেঞ্জের জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল মাকনা হাতি। কিছুটা পথ জঙ্গলে হাঁটলেও বেশির ভাগ সময় এ দিন শুয়েই ছিল জখম হাতিটি। জলপাইগুড়ি বন বিভাগের ডায়না রেঞ্জের বনকর্মীদের হাতিটির ওপর সর্বক্ষণের নজরদারির নির্দেশও দিয়ে রেখেছিল বন দফতর। হাতিটি এ দিন দিনভর কিছু না খেলেও যাতে খাবারের জন্যে বাড়তি পরিশ্রম করতে না হয় সেজন্যে শুঁড়ের নাগালেই খাবারের জোগানের ব্যবস্থাও রেখেছিলেন বনকর্মীরা। কিন্তু শনিবার বেলা যত বেড়েছে ততই হাতিটি অবসন্ন হয়ে পড়তে থাকে। সন্ধেয় সেটি মারা যায়।
রেলের পক্ষ থেকেই হাতির মৃত্যুর খবরে শোক প্রকাশ করা হয়েছে। আলিপুরদুয়ার রেল বিভাগের ডিআরএম কে এস জৈন বলেন, “হাতিটি যাতে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে সেজন্যে আমরাও প্রার্থনা করছিলাম, তাই মৃত্যুর খবরে আমরাও দুঃখ পেয়েছি।” ডায়না রেঞ্জের উদ্যোগে চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে হাতিটির ময়নাতদন্ত করার নির্দেশও দিয়েছে বন দফতর।