Firing Incident

প্রধান অধরাই, ক্ষোভ

শনিবার রাতে গোয়ালপোখরের মদিনাচকে মোটরবাইক দুর্ঘটনাকে ঘিরে বচসা থেকে গুলি চলে বলে অভিযোগ। গুলিবিদ্ধ হন এক তরুণী-সহ তিনজন।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

গোয়ালপোখর শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:১১
Share:

প্রতীকী ছবি।

গোয়ালপোখরে গুলি চালানো এবং উপপ্রধানের ভাইপো খুনে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ নাজিশকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার ৭২ ঘণ্টা কেটে গেলেও মূল অভিযুক্ত অধরা থাকায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। অভিযোগ ওঠেছে, প্রধান নাজিশকে আড়াল করার চেষ্টা করছে পুলিশ ও শাসক দলের প্রভাবশালীরা। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি গোলাম রসুল জানান, দ্রুত নাজিশকে গ্রেফতার করার কথা পুলিশকে বলা হয়েছে।

Advertisement

ইসলামপুর পুলিশ জেলার সুপার বিশপ সরকার রবিবার বলেন, “আড়াল করার অভিযোগ ভিত্তিহীন। নাজিশকে ধরার জন্য তল্লাশি চলছে। খুব শীঘ্রই অভিযুক্ত ধরা পড়বে।’’

শনিবার রাতে গোয়ালপোখরের মদিনাচকে মোটরবাইক দুর্ঘটনাকে ঘিরে বচসা থেকে গুলি চলে বলে অভিযোগ। গুলিবিদ্ধ হন এক তরুণী-সহ তিনজন। এর পরে বাড়িতে হামলা চালিয়ে মহম্মদ আরিফ নামে তৃণমূল উপপ্রধানের ভাইপোকে মারধর করে দোতলা থেকে ফেলে খুন করার অভিযোগ ওঠে প্রধান নাজিশ ও তার দলবলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হলেও, নাজিশ ফেরার বলে পুলিশ জানায়।

Advertisement

পুলিশের একটি সূত্রের খবর, নাজিশ সম্ভবত বিহারে লুকিয়ে রয়েছেন। গোয়ালপোখরের কাছে বাংলাদেশ সীমান্ত, বিহার সীমানা। নেপাল সীমান্তও বেশি দূরে নয়। সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও বিহার এবং নেপালে অবাধে যাতায়ত করা যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, নাজিশকে ধরার জন্য ইতিমধ্যে বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ইসলামপুর পুলিশ জেলার কর্তারা।

রবিবার সকাল থেকে অনেকেই উদ্‌গ্রীব ছিলেন জৈনগাও ১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ নাজিশ গ্রেফতার হয়েছে কি না, তা জানতে। তা না হওয়ায়, প্রশ্ন তুলেছেন নিহত মহম্মদ আরিফের কাকা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রাক্তন প্রধান খুলিলুর রহমান। এ দিন তিনি বলেন, “পুলিশ ইচ্ছে করলেই ধরতে পারবে। কিন্ত ওকে আড়াল করার চেষ্টা চলছে বলে খবর পেয়েছি।“ কেন আড়াল? খুলিলের দাবি, “তৃণমূলের প্রভাবশালীদের নির্দেশে পুলিশ ওকে আড়াল করার চেষ্টা করছে।’’ কারা ‘প্রভাবশালী’? খুলিলুর বলেন, “নাজিশ কার ঘনিষ্ঠ সেটা সবার জানা। ওপেন সিক্রেট। গুলি চালিয়ে থানায় গিয়ে আশ্রয় নেওয়ার পর থানা নাজিশকে আটকে না রেখে, ছেড়ে দেয়। কেন? এই প্রশ্নের উত্তর মন্ত্রী গোলাম রব্বানির কাছে চেয়েছি।’’

এ দিন স্থানীয় বিধায়ক ও মন্ত্রী রব্বানিকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পাঠানো প্রশ্নেরও উত্তর দেননি। তবে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি গোলাম রসুলের দাবি, “পুলিশকে বলা হয়েছে দ্রুত নাজিশকে গ্রেফতার করতে হবে। তাকে দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। পুলিশের ভুমিকা নিয়ে মন্ত্রী রব্বানি নিজেই পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। দল নিহত পরিবারের পাশে রয়েছে।’’

স্থানীয়দের একাংশ দাবি করছেন, দলের একাংশ নাজিশের কার্যকলাপ নিয়ে ক্ষুদ্ধ ছিলেন। দলের নেতাদের কাছে নালিশও করেছিলেন। কিন্ত দল ব্যবস্থা নেয়নি। দলের ব্লক সভাপতি রসুলের দাবি করেন, ‘‘নাজিশকে একাধিবার সতর্ক করা হয়েছিল।’’ তবে দলের অন্দরেই প্রশ্ন ওঠেছে, আগে ব্যবস্থা নিলে নাজিশ এত বড় কাণ্ড ঘটানোর সাহস পেত না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement