কোচবিহার বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সেই বিমান। —ফাইল চিত্র
বিমান রইল পড়ে, দিল্লি চলে গেলেন সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। সোমবার বিমান পরিষেবা নিয়ে আন্দোলনে রাস্তায় দেখা গেল না বিজেপির কাউকে। তৃণমূলের দাবি, বিমান চলাচলের নামে চমক দেওয়ার চেষ্টা করেছেন সাংসদ। তা যে ঠিক নয় সেটা, বুঝতে পারছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেই জন্যেই কেউ আর বিষয়টি নিয়ে সে ভাবে সামনে আসতে চাইছে না। বিজেপি অবশ্য জানিয়েছে, ৩১ জুলাই পর্যন্ত বিস্তারক যোজনায় তাদের সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলবে। তার পরেই তারা বিমান পরিষেবা নিয়ে আন্দোলনে নামবে। বিজেপি’র কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, ‘‘সবাই ব্যস্ত। তাই আগামী মাসের গোড়ায় আন্দোলন হবে।’’ নিশীথ বলেন, ‘‘তৃণমূলের কথার দাম নেই।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘বিমান পরিষেবা নিয়ে অল্প সময়েই সংগঠিত হয়ে মানুষ প্রতিবাদ গড়ে তুলবেন বলে আমি মনে করছি।’’
কোচবিহার বিমানবন্দর বন্ধ হওয়া নিয়ে এর মধ্যেই কেন্দ্র ও রাজ্য চাপানউতোর শুরু হয়েছে। সোমবার রাজ্য সরকারের মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো মেনে চলছে না কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। দলের সাংসদ যে ভাবে আচমকা বিমান নামিয়ে পরিষেবা চালুর কথা ঘোষণা করলেন, তার থেকেই বিষয়টি পরিষ্কার। তিনি বলেন, ‘‘ওরা এর আগেও বহু ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো মানেনি। এ বারও একই ঘটনা। আর যেখানে রাজ্যকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে, সেই দায়িত্ব রাজ্য নেবে কেন?’’ সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক পাল্টা দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর কথা তৃণমূল সরকারের মুখে মানায় না। তিনি বলেন, ‘‘যে সরকার সিবিআই অফিসারকে গ্রেফতার করে, তাদের মুখে ওই কথা মানায় না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে রাজ্য।”
এ দিন বিমানবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, নির্দিষ্ট জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে বিমানটি। প্রধান ফটকের সামনে একজন বেসরকারি রক্ষী। ভিতরে সব সুনসান। এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার ডিরেক্টরের অফিসে অবশ্য কর্মব্যস্ততা তুঙ্গে। এএআই-এর কোচবিহারের ডিরেক্টর বিপ্লব মণ্ডল বলেন, ‘‘সব রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” শনিবার যে বিমানটিতে চেপে কোচবিহারে এসে নেমেছিলেন নিশীথ, সেটি এখনও দাঁড়িয়ে রানওয়েতে।
এ দিন বাগডোগরা হয়ে দিল্লি যাওয়ার সময়ে সাংসদ রাজ্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে তিনি কিছুটা ব্যাকফুটে। নিশীথ দাবি করেন, কোচবিহার থেকে ‘নন সিডিউলড চার্টার্ড ফ্লাইট’ চলাচলের জন্য রাজি হয়েছে একটি সংস্থা। সে ক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমতির প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া রাজ্য সরকার সেই সময়টুকু দেননি বলেও দাবি করেন তিনি। সাংসদ বলেন, ‘‘মউ অনুযায়ী রাজ্য এ ভাবে কোনও বিমানবন্দরের নিরাপত্তা তুলে নিতে পারে না। বিমান সংস্থা এবং এএআই নিশ্চিতভাবেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিমান চলাচল শুরু হওয়ার আগে কথা বলতেন। সেই সময়টুকু দেওয়া হয়নি।’’
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সহ-সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘এর আগেও কয়েক দফায় রিজিওনাল কানেকটিভিটি স্কিমে বিমান চলাচলে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। এ বারের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। এ ভাবে দায়িত্ব কেউ নেবে না।’’