আইনবিভাগ সূত্রের খবর, কলকাতা এবং জলপাইগুড়ি দু’জায়গাতেই উত্তরবঙ্গের মামলার শুনানি হতে পারে।
উত্তরবঙ্গের চৌত্রিশ হাজারেরও বেশি মামলার শুনানি চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ চালু হলে সেখানে শুনানি শুরু হবে ওই মামলাগুলো দিয়েই। রাজ্যের আইনবিভাগ সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি বেঞ্চের এক্তিয়ার হবে যুগ্ম তালিকাভুক্ত। অর্থাৎ কলকাতা এবং জলপাইগুড়ি দু’জায়গাতেই উত্তরবঙ্গের মামলার শুনানি হতে পারে।
এই অস্থায়ী বেঞ্চ চালু করতে আরও কয়েকটি পদক্ষেপ বাকি রয়েছে। যার মধ্যে একটি হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন। আরেকটি হল অস্থায়ী ভবনের একটি নকশা হাইকোর্টে জমা দেওয়া। এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা জলপাইগুড়িতে বেঞ্চ চালুর অনুমোদন দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, নতুন করে অনুমোদনের প্রয়োজন নাও হতে পারে। শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের সুপারিশ এবং সুপ্রিম কোর্টের ভেটিং হয়ে গেলেই জলপাইগুড়িতে শুনানি শুরু সম্ভব। একটি আইনি বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরেই স্বপ্ন পূরণ হবে শহরবাসীর। হাইকোর্টের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে মাসখানেক সময় লাগবে বলে ধারণা আইনজীবীদের।
সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় সমন্বয় কমিটির সম্পাদক, আইনজীবী কমলকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সার্কিট বেঞ্চে শুনানি শুরু হবে, এ তো আমাদের কাছে স্বপ্ন! দ্রুত এই কাজ শুরু হোক, আমরা চাইছি।’’ অস্থায়ী ভবনে শুনানি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে স্থায়ী ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়াতেও গতি আনার দাবি জানান তিনি।
উত্তরবঙ্গের আইনজীবীদের একাংশের দাবি, জলপাইগুড়ির বেঞ্চের বিচারবিভাগীয় এক্তিয়ার হোক সংরক্ষিত তথা ‘এক্সক্লুসিভ’। অর্থাৎ উত্তরবঙ্গের আট জেলার মামলার শুনানি উত্তরবঙ্গের বেঞ্চেই হওয়া প্রয়োজন বলে জানান তাঁরা। এরকম হলে বিচারপ্রার্থীদের আর দক্ষিণবঙ্গে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। তবে বেঞ্চের ওই এক্তিয়ার থাকবে কিনা বা সপ্তাহে কতদিন শুনানি হবে তার পুরোটাই নির্ভর করছে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের উপর। জলপাইগুড়ির বেঞ্চ চালু নিয়ে রাজ্য সরকার এবং হাইকোর্টের প্রশাসন ফের সক্রিয় হলেও এখনও হাইকোর্টের ফুল বেঞ্চের বৈঠক হয়নি। ফুল বেঞ্চের বৈঠকেই এই বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
আইনজীবীরা অবশ্য তাঁদের দাবি মেটা নিয়ে আশাবাদী। বার কাউন্সিলের বিদায়ী সদস্য গৌতম দাসের কথায়, “উত্তরবঙ্গের আট জেলার প্রচুর মামলা হাইকোর্টে রয়েছে। তার সংখ্যা চৌত্রিশ হাজারেরও বেশি। দ্রুত বেঞ্চে শুনানি শুরু হলে উত্তরবঙ্গের সব জেলার বিচারপ্রার্থীরাই উপকৃত হবেন। রাজ্যের আইনমন্ত্রী এবং আইন দফতরের সচিবেরা নিয়মিত হাইকোর্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বার কাউন্সিল থেকেও আইন বিভাগের উপর চাপ বজায় রাখা আছে।“