সাজ: কালিম্পঙের রাস্তা সেজেছে ভোটের আগে। ছবি: সন্দীপ পাল
অনেক কিছু বদলে গিয়েছে কার্শিয়াঙে।
একসময়ের ডাকসাইটে জিএনএলএফ নেতা ইন্দ্রনারায়ণ প্রধান এখন রাজনীতির ধারে কাছে ঘেঁষতে চান না। বাড়িতে হাঁস-মুরগির খামার করেছেন। ছোটখাট ঠিকাদারিও করছেন।
যিনি কার্শিয়াঙের মোর্চা সংগঠনকে জোরদার করে জিটিএ সভাপতি হয়েছেন, সেই প্রদীপ প্রধান এখন তৃণমূলে। দলে দলে মোর্চার ছেলেমেয়েরা এখন প্রদীপের সঙ্গে ঘোরাফেরা করেন ঘাসফুলের পতাকা নিয়ে।
কার্শিয়াং বাজারের ভুট্টা বিক্রেতা গণেশ কামি, আনাজ ব্যবসায়ী সবিতা তামাঙ্গরা ভোটের কথা উঠলে এ সব কথাই ঘুরেফিরে টেনে আনেন। চল্লিশোর্ধ্ব গণেশ বলেন, ‘‘ইন্দ্রনারায়ণ জিএনএলএফের কার্শিয়াঙের সভাপতি থাকাকালীন কি দাপটই না দেখিয়েছেন। তাঁর এক ইশারায় বাজারের সব দোকান বন্ধ হয়ে যেত। এখন তিনিই কি না সন্তর্পণে চলাফেরা করে থাকেন।’’ মুখের কথা কেড়ে নিয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব সবিতা তামাঙ্গ বলেন, ‘‘জবরদস্তি করলে একদিন জবরদস্ত ঠোক্কর খেতেই হবে। সেটাই দেখছি। তবে জানি না, শেষ পর্যন্ত পুরসভার চেহারা কতটা পাল্টাবে।’’
চেহারা নিয়ে বড়ই দুঃখে দিন কাটায় কার্শিয়াং। নিকাশির ভাল ব্যবস্থা হয়নি। পানীয় জল অপ্রতুল। জঞ্জাল ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় পাড়ার রাস্তায় চলাফেরা করা দায়। প্রদীপ প্রধান, বিন্নি শর্মারা বলছেন, ‘‘সে জন্য এ বার কার্শিয়াঙকে সাজাতে তৃণমূলকে সুযোগ দেবেন মানুষ।’’ যা শোনার পরে রোশন গিরি, বিনয় তামাঙ্গরা ‘অবাস্তব’ বলে দাবি করছেন। তবে প্রদীপ প্রধান যে হেলাফেলা করার মতো নেতা নন সেটাও একান্তে মানছেন তাঁরা।
তাতেই মুচকি হাসছেন একাধিক মামলায় জর্জরিত প্রদীপ। তিনি বলছেন, ‘‘কার্শিয়াং আমাকে খালি হাতে ফেরাবে ভাবতেই পারি না।’’ টানা ক’দিন ধরে প্রচার চালিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ফিরেছেন কোচবিহারে। তিনি বলছেন, ‘‘কার্শিয়াঙের মানুষ যে ভাবে উন্নয়নের কাজে গতি আনতে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে সামিল হতে চাইছেন, তাতেই ভাল ফলের আশা করছি।’’
ফলে কার্শিয়াঙের দিকে বাড়তি নজর দিতে হচ্ছে মোর্চাকেও।