শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক
পার্টি অফিসে বসে না থেকে পাড়ায় পাড়ায় সাধারণ মানুষের বাড়ি যাওয়ার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিলেন শাসক দলের তিন মন্ত্রী।
তাঁদের বক্তব্য, কোনও ভুল করে থাকলে সাধারণ মানুষের কাছে গিয়েই ক্ষমা চাইতে হবে। প্রয়োজনে তাঁদের মন জিততে হবে। তাঁদের আরও কড়া বার্তা, নিজের দলকে সামনে রেখে যাঁরা এত দিন ধরে রোজগার করে এসেছেন, তাঁরা কিছুদিনের জন্য অন্তরালে চলে যান। ফালাকাটার আগামী উপনির্বাচনে দলের হয়ে রণকৌশল ঠিক করতে এসে সোমবার এক সভায় এই রকমই বার্তাই দিলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের সঙ্গে ফালাকাটাতেও ভরাডুবি হয়েছিল তৃণমূলের। এই বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ২৭ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকতে হয়েছিল তৃণমূলকে। এই অবস্থায় এই উপনির্বাচন নিয়ে তারা যে যথেষ্ট সতর্ক তা বিধায়ক অনিল অথধিকারীর মৃত্যুর পর পরই ভোটের প্রস্তুতিতে নেমে বুঝিয়ে দেন তৃণমূলের জেলা নেতারা।
এ দিন তিন মন্ত্রীই ফালাকাটা কমিউনিটি হলে দলের বুথ স্তরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা করেন। সেখানেই তাঁরা বুঝিয়ে দেন, সম্প্রতি শেষ হওয়া তিনটি উপনির্বাচনের মতো ফালাকাটা উপ নির্বাচনেও জেতা সম্ভব। তবে তার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের আচরণে অনেক পরিবর্তন আনতে হবে। পূর্ণেন্দু বলেন, ‘‘কোনও একটি নির্বাচনে জেতার জন্য মানুষের ভিতর থেকে সমর্থন পাওয়াটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। তাই ঔদ্ধত্যকে দূরে সরিয়ে রেখে মানুষের কাছে যেতে হবে। নেতাদের নমনীয় হতে হবে। প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সমালোচনা শুনতে হবে।’’ মন্ত্রী মলয় বলেন, ‘‘শুধু পার্টি অফিসে বসে না থেকে পাড়ায় যান। এলাকায় এলাকায় গিয়ে আমরা যদি মানুষকে বোঝাতে না পারি, তাহলে সেটা আমাদের ব্যর্থতা।’’ রাজীব বলেন, ‘‘ফালাকাটায় উপনির্বাচন কবে ঘোষণা হবে, তা না ভেবে পনেরো দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে ধরে নিয়ে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ুন।’’
গত লোকসভা নির্বাচনে হারের পর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে তৃণমূল নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়া-সহ একাধিক দুর্নীতির নানা অভিযোগ ওঠে। ব্যতিক্রম ছিল না আলিপুরদুয়ারও। এদিন অবশ্য সেই প্রসঙ্গ ওঠেনি। তবে রাজীব সাফ বলেন, দলকে সামনে রেখে এতদিন যারা রোজগার করেছেন, তারা কিছুদিনের জন্য অন্তরালে চলে যান। পূর্ণেন্দুকেও বলতে শোনা যায়, ‘‘শুধু নিজেরটা ভাবলে দলের যা ক্ষতি হওয়ার তা হবেই।’’
এ দিন তাঁকে এমনটাও বলতে শোনা যায়, মৃদুল গোস্বামী যে জেলা সভাপতির পদ পাওয়ার যোগ্য সেটা তাঁকে এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। নির্বাচনে হারলে মৃদুল আর কোনওদিন সভাপতি হতে পারবেন না।