সোমবার ক্যাম্পাসে গবেষক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে অবস্থান-বিক্ষোভ। — ফাইল চিত্র
বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই গবেষক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির রেশ কাটেনি এখনও। তারপরে এ বার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর লাগোয়া এলাকাতে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ ক্লাস করে সাড়ে তিন নম্বর গেট দিয়ে বেরিয়ে শিবমন্দির এলাকায় ফিরছিলেন কলা বিভাগের ওই ছাত্রী। অভিযোগ, মোটরবাইকে এক যুবক এসে একাধিকবার তার সামনে ঘোরে। আচমকা পিছন থেকে এসে গায়ে হাত দেয় বলে অভিযোগ। ছাত্রীটি চেঁচালে পালায় অভিযুক্ত। ঘটনার পর সতীর্থদের একাংশকে নিয়ে মাটিগাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রী। অভিযুক্ত যুবকের মোটরবাইক নম্বরও দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। অভিযুক্ত হেলমেট পরে থাকায় মুখ বোঝা যায়নি।
সন্ধ্যায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম উজ্জ্বল পাল। মাটিগাড়ার পালপাড়ার বাসিন্দা। সোমবার এবং এ দিন দুটি ঘটনাই এই যুবক করেছে পুলিশের দাবি। এ ধরনের আরও বেশ কিছু ঘটনায় অভিযুক্ত জড়িত বলে পুলিশ জানায়। উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কিছু ঘটলে কর্তৃপক্ষের তরফে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাইরে কিছু ঘটলে পুলিশকেই দেখতে হবে।’’
এর আগে, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পদার্থবিদ্যা বিভাগের সামনে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পর দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ স্কলার সংগঠনের সদস্যদের নেতৃত্বে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে ক্যাম্পাস হয়ে পড়ে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি ওঠে। দু’দিন না যেতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় হস্টেলের ছাত্রীদের অনেকেই উদ্বিগ্ন। অম্বিকা রাই, নিকিতা লামারা বলেন, ‘‘আমরা হস্টেলে থাকি। কাজে কর্মে ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে হয়। সকলেই উদ্বেগে রয়েছি।’’
সোমবার ক্যাম্পাসে শ্লীলতাহানির ঘটনার পর বুধবার বৈঠক করে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, আধিকারিক, কর্মী সকলকে নিয়ে উপাচার্য কমিটি গঠনের কথা জানান। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রই জানিয়েছে, শুক্রবারের মধ্যে কমিটি গঠন হলে দ্রুত তারা বিস্তারিত রিপোর্ট দেবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই ক্যাম্পাসে নিরাপত্তারক্ষীদের টহলদারি এবং পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। রিসার্চ স্কলারদের সংগঠনের তরফে বাদল রায় বলেন, ‘‘পুলিশ বিষয়টি দেখুক।’’