—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বিধায়ক-হস্টেলে কী করে তাঁর নামে ঘর ‘বুকিং’ হল, সেই প্রশ্ন তুলে বিধানসভার সচিবকে চিঠি দেবেন কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে। তিনি ওই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন। বৃহস্পতিবার কলকাতায় ‘এমএলএ হস্টেল’ থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, হুগলির বাসিন্দা ওই তিন যুবক পূর্ব বর্ধমানের কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান আনন্দ দত্তের কাছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে পাঁচ লক্ষ টাকা আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন। টাকা লেনদেনের জন্য ‘এমএলএ হস্টেলের’ একটি ঘরে তাঁকে যেতে বলা হয়েছিল। সেই ঘর ‘বুক’ করা হয়ে হয়েছিল কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়কের নামে। ওই হস্টেল থেকেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। নিখিলরঞ্জন অভিযোগ করেন, ওই ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত থাকতে পারে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘এমএলএ হস্টেলের একটি ঘর বুকিং করতে বিধায়কের চিঠি প্রয়োজন হয়। যেখানে বিধায়কের সই ও সিল থাকে। বিধায়ক চিঠি না দিলে ধৃতোরা তা পেল কোথায়? কাদের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের সম্পর্ক রয়েছে তা এর থেকেই স্পষ্ট। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করেছে। তাতে সব ষ্পষ্ট হবে।’’
শুক্রবার সকালে এমএলএ হস্টেলের সুপারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন নিখিলরঞ্জন। তাঁকে তিনি জানান, এর পরে তাঁর নামে কোনও ঘর বুকিংয়ের আবেদন জমা পড়লে, তাঁকে যাতে ফোন করে নেওয়া হয়। নিখিলরঞ্জন বলেন, ‘‘আমার লেটারহেড, সই সব জাল করা হয়েছে। কী করে এমন একটা চিঠিতে ঘর দেওয়া হল, তা জানতে চেয়েছি হস্টেল সুপারের কাছে। বিধানসভার সচিবকে চিঠি দিয়েও এর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করব। এই ঘটনার পিছনে শাসকদলের রাজনৈতিক চক্রান্ত থাকতে পারে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘বিজেপি বিধায়কদের হেয় করার চেষ্টা হতে পারে। অভিযুক্তরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে টাকা চেয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁরা যে তৃণমূলেরই লোক, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’’ নিখিলরঞ্জন জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে পুলিশের কোনও কথা হয়নি। পুলিশের তরফ থেকে তাঁকে ফোনও করা হয়নি।
কোচবিহার জেলায় বিজেপির ছয় জন বিধায়ক রয়েছেন। সেই বিধায়কেরা নিয়মিত কলকাতায় যাতায়াত করেন। যাঁরা এমএলএ হস্টেলের ঘরও ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয়, অনেক সময়ই ঘনিষ্ঠদের ওই এমএলএ হস্টেলের ঘর ব্যবহারের জন্য তা বুকিং করতে চিঠিও দেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনার জেরে তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এ দিন বিজেপির তুফানগঞ্জের বিধায়ক মালতী রাভা রায় হস্টেল সুপারের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা অনেক সময়ই নানা কাজের জন্য নিজস্ব লেটারহেডে চিঠি দিয়ে থাকি। কিন্তু তা পরিচিতদের মধ্যেই। এমন ঘটনা কী করে ঘটল, তা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। এ বার থেকে আমরাও আরও সতর্ক হব।’’