আশ্বাস: জখম ছাত্রদের সঙ্গে রেল হাসপাতালে গিয়ে কথা বলছেন সাবিনা ইয়াসমিন। নিজস্ব চিত্র।
স্কুল বাস দুর্ঘটনায় আহত ছাত্রদের দেখতে রবিবার সকালে মালদহের গনি খান চৌধুরী রেল হাসপাতালে গেলেন সেচ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। এ দিন কলকাতা থেকে নেমেই তিনি রেল হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি থাকা ১১ জন ছাত্রের প্রত্যেকের সঙ্গে এবং পরিবারের লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেন। রেলের চিকিৎসকের কাছ থেকেও ছাত্রদের শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন তিনি। রেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতদের মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে শনিবার রাতেই কলকাতার বিআর সিংহ রেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ দিকে মালদহ মেডিক্যালে এ দিন এক জন আহত ছাত্র ভর্তি রয়েছেন। বাকি সাত জনকে শনিবার রাতেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
আহত ছাত্রদের দেখে বেরিয়ে সাবিনা বলেন, ‘‘বাস দুর্ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন দুই হাসপাতালে ভর্তি থাকা ছাত্ররা আপাতত বিপন্মুক্ত। দুর্ঘটনার বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। তবে মালদহ জেলা জুড়ে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের যে বাসগুলি চলছে সেগুলির পরিস্থিতি জেলাশাসককে খতিয়ে দেখার জন্য বলব।’’
শনিবার দুপুরে মালদহের ইংরেজবাজার থানার দামোদরপুরে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী বোঝাই একটি স্কুল বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলিতে উল্টে পড়ে। জানা গিয়েছে, ৪৫ আসনের ওই স্কুল বাসে ৭১ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। দুর্ঘটনায় কমবেশি সব ছাত্রছাত্রীই আহত হন। তবে তাঁদের মধ্যে মালদহের রেল হাসপাতালে ১২ জন ও মালদহ মেডিক্যালে ৮ জনকে ভর্তি করা হয়। রেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় অঙ্কিত সরেন নামে এক ছাত্রকে কলকাতার রেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এ দিন রেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল আহত ছাত্ররা সকলেই রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে রয়েছে। মালদহের সুকান্তপল্লির বাসিন্দা দশম শ্রেণির ছাত্র শুভদীপ সিংহ বলেন, ‘‘একেই শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা। তার উপরে দুর্ঘটনা নিয়ে আতঙ্কে রাতে দু’চোখের পাতা এক করতে পারিনি।’’ একই কথা ভর্তি থাকা আশিস রায়, উজ্জ্বল দাসদেরও। রেল হাসপাতালের চিকিৎসক সুদীপ্ত বসু বলেন, ‘‘আহত ছাত্রদের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। তবে তাঁরা বিপন্মুক্ত। এই হাসপাতালে ভর্তি ১২ জন ছাত্রের মধ্যে একজনকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে ও একজনের চিকিৎসা চলছে সিসিইউয়ে।’’
এ দিকে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পরেই বাস চালককে আটক করা হয়েছে। কোনও ছাত্রের অভিভাবক রবিবার বিকেল পর্যন্ত ওই ঘটনা নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ জানাননি। তবে পুলিশ নিজেই সুয়োমোটো মামলা রুজু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, বাসটি স্কুল ছাত্রদের নিয়ে বের হওয়ার পরেই পাশের পেট্রল পাম্পের দিকে থেকে দু’জন ছাত্র রাস্তা পারাপার করছিল এবং তাঁদের বাঁচাতে গিয়েই বাসটি রাস্তার ধারে চলে যায় ও নয়ানজুলিতে উল্টে পড়ে। পুলিশ সুপার প্রদীপ যাদব বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’