রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
যারা বিদ্যুতের বিল না দিতে গ্রামবাসীদের উৎসাহ যোগাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
রবিবার কোচবিহার উৎসব হলে বকেয়া বিদ্যুতের বিল নিয়ে প্রশাসনের ডাকা এক বৈঠকে যোগ দিয়ে ওই কথা বলেন মন্ত্রী। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েত-প্রধান এবং জেলা পরিষদের সদস্যরা কেউ যদি বিদ্যুতের বিল না দিয়ে থাকেন তবে, তাঁদের ভাতা কাটার ব্যবস্থা করারও আর্জি জানান মন্ত্রী। তিনি এই বিষয়ে কোচবিহারের জেলাশাসককে আইন দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, “এখন থেকে বিদ্যুতের বিল পরিশোধের কাগজ দেখানোর পরেই গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের সদস্যরা ভাতা পাবেন।” সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “যারা বিদ্যুতের বিল না দেওয়ার প্রচার করছে তাঁদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো মামলা করা হবে।”
এ দিন উৎসব হলে বৈঠকে মেখলিগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিয়তি সরকার থেকে শুরু করে কোচবিহার-২ পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষে গোপাল সরকার এবং মাথাভাঙার বিদ্যুৎ বিভাগের স্টেশন ম্যানেজার সামসুল হক গ্রেটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। নিয়তি দেবী অভিযোগ করেন, একাধিক বাড়িতে মিটার বক্স গ্রেটারের পতাকা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। পুলিশ অভিযোগ পেলেও অনেক ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। গোপালবাবুর দাবি, বিদ্যুতের বিল দেওয়া হবে না জানিয়ে দু’দিন আগেই গোপালপুরে মিছিল করে গ্রেটার। সামসুল হক বলেন, “বিল নিয়ে কথা বলতে গেলেই মিথ্যে অভিযোগ তোলা হয়।”
কার্যত গ্রেটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে আসায় কড়া অবস্থান নেওয়ার কথা জানান মন্ত্রী। গ্রেটার নেতা বংশীবাবু বলেন, “আমরাও চাই ওই বিষয়ে মামলা হোক। তা হলে আদালত থেকেই জানতে পারব কোচবিহার কীভাবে জেলা হল।”
গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি এলাকা থেকে বকেয়া বেশি সংগ্রহ হবে, তাঁদের পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও এ দিন জানান মন্ত্রী। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির এইচআর বিভাগের ডিরেক্টর সুজয় সরকার বৈঠকে জানান, গত এক মাসে ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বকেয়া সংগ্রহ হয়েছে। বর্তমানে বকেয়া রয়েছে ১১৭ কোটি ৩ লক্ষ টাকা। গোসানিমারি, মাতালহাট, ভেটাগুড়ি, বুড়িরহাট, নাজিরহা-সহ দিনহাটা ও কোচবিহার সদরে বকেয়ার পরিমাণ বেশি। সুজয়বাবু বলেন, “আর্থিক ভাবে দুর্বল গ্রাহকরা যাতে কিস্তিতে বিল দিতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে।” কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “বকেয়া বিল আদায়ে সমস্তরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”