বিধ্বস্ত: ইংরেজবাজার শহরে ফের গণপিটুনির শিকার যুবক। ছবি: অভিজিৎ সাহা
আবার এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবক। আবার গণপিটুনি। আর আক্রান্ত আবার আংশিক মানসিক ভারসাম্যহীন।
সতর্কতা বাড়িয়েছে প্রশাসন। সচেতনতার প্রচারও চলছে। কিন্তু সামান্য ইন্ধন পেলেই রাস্তার মাঝখানে ঝটপট বিচারসভা বসিয়ে কাউকে ধরে বেমালুম গণধোলাই দেওয়ার প্রবণতা মালদহ ছেড়ে যাওয়ার নাম করছে না। এ বার আবার ইংরেজবাজার শহরেই বিহারের পূর্ণিয়ার এক যুবককে ধরে পেটানো শুরু হল। ছেলেটি দিন পাঁচেক আগে পূর্ণিয়ার বাড়ি থেকে নিখোঁজ। সেখানে নিখোঁজ ডায়রিও করা হয়েছে। কী ভাবে তিনি মালদহের ইংরেজবাজারে এসে পৌঁছলেন, তা-ও বলতে পারছেন না ফইজুল শেখ নামে সেই যুবক। পুলিশের এক অফিসার জানান, ‘‘ছেলেটি আংশিক মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি অনেক কিছুই বলতে পারছেন না। তাঁর পকেট থেকে একটি চিরকুট পেয়েছি আমরা। সেই চিরকুটে ফোন নম্বর দেখে ফোন করে কিছু খবর পাওয়া গিয়েছে।’’
কিন্তু সেই নাম ধাম পরিচয় পাওয়া গিয়েছে পুলিশের হাতে পড়ার পরে। এ দিন দুপুরে ফইজুল যখন ইংরেজবাজারের ঝলঝলিয়ার রেল কলোনি এলাকায় ছিলেন, কেউই তাঁকে চিনতেন না। স্থানীয় এক মহিলার সন্দেহ হয়, ফইজুল তাঁর ছেলেকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। তাঁর চিৎকারেই আশপাশে লোক জুটে যান। তাঁরা বেধড়ক মারধর শুরু করেন ফইজুলকে। চড় লাথি মারতে থাকেন অনেকে। কিন্তু মারের মুখে নিজের নামটুকুও ফইজুল ভাল করে বলতে পারেননি। তাঁকে পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
কিন্তু কেন বারবার অজ্ঞাতপরিচয় আংশিক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি গণপিটুনির শিকার হচ্ছেন? এলাকার মানুষের বক্তব্য, শুধু ছেলেধরা বলে নয়, চোর হতে পারে সন্দেহেও অজ্ঞাতপরিচয় কাউকে দেখলে মারধর করা হচ্ছে। অজ্ঞাতপরিচয় হলে, তাঁদের মারধর করা সহজ বলেও মনে করছেন অনেকে। অনেকে ধারণা করছেন, ভিড়ের মধ্যে মিশে মারধর করা হলে পুলিশ কাউকে ধরবেও না।
গণপিটুনির সূত্রপাত হয় হবিবপুর ব্লকে। সেই ব্লকে একাধিক ঘটনা ঘটে। হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীতে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পেটাতে পেটাতে খুনই করে ফেলা হয়। তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে। কিন্তু তারপরে তা কমার বদলে বেড়ে যায়। খাস ইংরেজবাজারেও গণপিটুনি হয়। পুলিশ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। কিন্তু প্রবণতা রোধ করা যাচ্ছে না।