উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গুদামে পড়ে থেকে কয়েক কোটি টাকার ওষুধ নষ্টের অভিযোগ উঠেছিল বছর খানেক আগে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত স্টোরকিপার শঙ্কর ধরকে কার্যত ‘ক্লিনচিট’ দিল স্বাস্থ্য দফতর।
অভিযোগ ওঠায় অবসরের পর স্টোরকিপার শঙ্করবাবুকে অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা দেওয়া আটকে দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। দিন তিনেক আগে স্বাস্থ্য দফতর ওই কর্মীকে সমস্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সেই মতো হাসপাতাল সুপার নির্মল বেরা শঙ্করবাবুর সমস্ত ফাইলে স্বাক্ষরও করে দিয়েছেন। বুধবার স্মারকলিপি দিতে এসে ওষুধ কেলেঙ্কারি ঘটনার তদন্ত কী হল তা জানতে চেয়েছিলেন সিপিএমের স্থানীয় নেতৃত্ব। সুপার বলেন, ‘‘ স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। তার পরেই তৎকালীন স্টোরকিপার শঙ্করবাবু যাতে অবসরকালীন সমস্ত সুবিধা পান সেই ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশ মতো তাঁর পেনশন ফাইলের নথিপত্রে আমি সই করেছি।’’
অন্তত ২০ বছর ধরে কয়েক কোটি টাকার ওষুধ স্টোরে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক দিবাকর সরকার বলেন, ‘‘স্টোর কিপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তাঁর অবসরকালীন সুবিধা আটকে দেওয়া হয়েছিল। এখন তাঁকে সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ায় এটাই স্পষ্ট হচ্ছে যে দোষীদের আড়াল করা হচ্ছে। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে।’’
ওই ঘটনায় সে সময়ের হাসপাতাল সুপারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। রাজ্যের এক স্বাস্থ্যকর্তা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে এসে তদন্ত করে যান। তদন্তের সময় তৎকালীন সুপার সব্যসাচী দাস স্বাস্থ্যকর্তাকে বিস্তারিত জানান। ডাকা হয়েছিল শঙ্করবাবুকেও। তবে শঙ্করবাবু স্বাস্থ্যকর্তার সঙ্গে দেখাই করেননি বলে অভিযোগ। শঙ্করবাবু অবশ্য এখনই এসব নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘কোনও কাগজপত্র এখনও হাতে পাইনি। সে সব না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলতে পারব না।’’
হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ দিনের পর দিন অনুপস্থিত থেকে কাজে ফাঁকি দিলেও কর্তৃপক্ষ দেখছেন না বলে এ দিন অভিযোগ তোলেন আন্দোলনকারীরা। দিবাকর বাবুর অভিযোগ ট্রমা সেন্টার এখনও চালু হল না। গত বছর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের একটি যাত্রী প্রতীক্ষালয় দেখভালের জন্য ঠিকাদার সংস্থাকে ১লক্ষ ৩০ হাজার টাকায় বরাত দেওয়া হয়েছিল। অথচ এ বছর তা কমে কী করে ৯০ হাজার করা হল সেই প্রশ্ন তুলেছেন দিবাকরবাবুরা।
সুপার জানান, চিকিৎসকদের হাজিরার বিষয়টি অধ্যক্ষ দেখেন। তাঁকে বিষয়টি জানানো হবে। ট্রমা সেন্টারের যন্ত্রাংশ কেনার জন্য সম্প্রতি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরঞ্জাম কেনার পর স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসক নিয়োগ করতে হবে। তার পরেই ট্রমা সেন্টার চালু হবে। তা ছাড়া টেন্ডার মেনেই প্রতীক্ষালয়ের বরাত দেওয়া হয়েছে।