‘উন্নয়নের স্বার্থে’ আরও কয়েকজন কংগ্রেস বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মালদহের সুজাপুরের বিধায়ক আবু নাসের খান চৌধুরী(লেবু)। শনিবার সকালে কলকাতা থেকে ইংরেজবাজারে ফিরে কোতুয়ালিতে নিজের বাস ভবনে বসে ওই দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি জানান, জেলার দুই সাংসদ অর্থাৎ জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর ও আবু হাসেম চৌধুরীকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর যুক্তি, ‘‘কে কোন দল করবেন, তা ঠিক করার স্বাধীনতা সকলেরই রয়েছে। সবাই নিজের পছন্দ মতো দল করতে পারেন। দল নিজের ইচ্ছাতেই করা যায়। তবে উন্নয়ন করতে হলে তৃণমূলে যোগ দিতে হবে। উন্নয়নের স্বার্থে কয়েকজন কংগ্রেসের বিধায়ক খুব শীঘ্রই তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন।’’
লেবুবাবুর উন্নয়নের এই যুক্তি অবশ্য মানতে নারাজ জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সাংসদ মৌসম নুর বলেন, ‘‘উন্নয়ন করার মানসিকতা থাকলে যে কোনও দল থেকেই উন্নয়ন করা যায়। কংগ্রেসে থেকে আমরা জেলার উন্নয়ন করছি। আগামীতে আরও উন্নয়ন হবে। আমাদের দলের কেউ তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন কি না তা আমার জানা নেই।’’ তাঁর দাবি,‘‘ বাজারে এমন গুজব ছড়িয়ে দিয়ে মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করতে চাইছেন কেউ কেউ।’’ উন্নয়ন প্রসঙ্গে মৌসম নুরের সুরেই সুর মেলান আরাক সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী(ডালু)। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসে থেকে বরকতদা জেলার উন্নয়ন করেছে। উন্নয়নে জেলাতে কংগ্রেসের বিকল্প কেউ নেই। লেবুদা কেন তৃণমূলে গিয়েছেন তা ওঁর বিষয়।’’
কংগ্রেস ছাড়ার ইচ্ছা বছর খানেক আগেই প্রকাশ করেছেন মালদহের গনি পরিবারের অন্যতম সদস্য তথা সুজাপুরের বিধায়ক আবু নাসের খান চৌধুরী ওরফে লেবু বাবু। সেই সময় জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। পরিবারের অন্য সদস্যদের কথায় সেই সময় দল ছাড়েননি তিনি। তবে গত ৬ জুন কলকাতায় গিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন লেবু।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার দল ছাড়ার বিষয়ে আগাম কাউকে জানাননি লেবুবাবু। যার জন্য কোতুয়ালি পরিবারের সদস্যেরাও তাঁর এই সিদ্ধান্তে অবাক হয়ে যান। তিনি দল ছাড়তেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলা থেকে ব্লক নেতারা। সবাই লেবুবাবুর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার দাবি তোলেন।
এই প্রসঙ্গে এদিন লেবুবাবু বলেন, ‘‘আমার আগে আরও অনেকে কংগ্রেসের বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা তো কেউ বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেননি।’’ আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে ভোটে লড়বেন বলে জানিয়েছেন সুজাপুরের বিধায়ক।
কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিতে পারে বলে জেলার রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে চর্চা চলছিল। লেবুবাবুর এদিনের মন্তব্যের পর সেই জল্পনা আরও জোরাল হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কে বা কারা দল ছাড়তে পারেন, সেই আলোচনায় নাম এসেছে পুরাতন মালদহের বিধায়ক ভুপেন্দ্র নাথ হালদার, মোথাবাড়ির বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন ও চাঁচলের বিধায়ক আসিফ মেহবুরের। তবে ওই বিধায়কেরা একে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।