—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা ভোটের মুখে ‘নিঃশর্ত নাগরিকত্বের’ দাবিতে মালদহে পথে নামতে চলেছে মতুয়া মহাসঙ্ঘ। এ ব্যাপারে জেলার মহাসঙ্ঘের নেতৃত্ব আলাপ-আলোচনা করে আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করার কাজ শুরু করেছেন। সংগঠনের বক্তব্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) অনুযায়ী, তারা আবেদন করবে না। লোকসভা ভোটের মুখে মতুয়া মহাসঙ্ঘের এই পরিকল্পনা নিয়ে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির।
মতুয়া মহাসঙ্ঘের মালদহ জেলা সম্পাদক কাশীশ্বর মৈত্র বলেন, ‘‘সিএএ-তে ফর্ম পূরণের ক্ষেত্রে যে শর্ত দিয়েছে তাতে আমাদের অনেকেই তা পূরণ করতে পারবেন না। যেমন আমাদের ৮০ শতাংশ মানুষের মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এই দেশের নাগরিক। আমাদের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড আছে। সরকারি সমস্ত সুযোগ-সুবিধা মিলছে আমাদের। তা হলে আবার নতুন করে কেন নাগরিকত্বের জন্য আমাদের আবেদন জানাতে হবে। আমরা নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দাবি করছি।" তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের যে সব কার্ড রয়েছে, তার যে কোনও একটি কার্ডের ভিত্তিতে বাড়িতে নাগরিত্বের কার্ড পাঠিয়ে দেওয়া হোক। এই দাবিতে আমরা খুব শীঘ্রই আন্দোলনের নামব।’’
মতুয়াদের সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলার গাজল, বামনগোলা, হবিবপুর ও পুরাতন মালদহ-এই চারটি ব্লকে বেশিরভাগ মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজনের বাস। সেই সংখ্যা প্রায় তিন লক্ষের কাছাকাছি। সারা দেশে সিএএ কার্যকর হওয়ার পরে, মতুয়াদের একাংশের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেলেও, বেশিরভাগই কিন্তু উদ্বেগ ও আতঙ্কে রয়েছে বলে জেলার মতুয়া মহাসঙ্ঘের দাবি। মূলত, নতুন করে দেশহীনতার আতঙ্ক গ্রাস করেছে তাদের। মহাসঙ্ঘ সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে কিছু জেলায় ‘নিঃশর্ত নাগরিকত্বের’ দাবিতে মতুয়ারা পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেছেন। হচ্ছে পথ অবরোধও। মালদহেও একই দাবিতে এ বার আন্দোলন করবেন বলে জানাল মতুয়া মহাসঙ্ঘ। সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে তাদের নেতৃত্ব মতুয়া প্রভাবিত এলাকাগুলিতে আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করা নিয়ে বৈঠক করেছেন। আরও কয়েকটি জায়গায় বৈঠক বাকি রয়েছে।
তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের মুখে সিএএ কার্যকর করে মানুষকে আতঙ্কিত করার পাশাপাশি বিভ্রান্ত করে রেখেছে বিজেপি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে এ নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। আমরাও জেলায় প্রতিবাদ করছি।’’ বিজেপির উত্তর মালদহের সাংসদ তথা প্রার্থী খগেন মুর্মু বলেন, ‘‘কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য সিএএ করা হয়নি। বরং, এতে নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে। কিছু সংগঠন লোকসভা ভোটে ফায়দা লুটতে মানুষকে
ভুল বোঝাচ্ছে।’’