পুজোর ‘স্মৃতি’তে ভারাক্রান্ত নদী

উৎসব গিয়েছে। রেখে গিয়েছে ‘স্মৃতি’। তার তা বইতে হচ্ছে নদীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জয়ন্তী শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১৭
Share:

পরিত্যক্ত: জয়ন্তী নদীতে পড়ে রয়েছে দুর্গাপ্রতিমার কাঠামো। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী

উৎসব গিয়েছে। রেখে গিয়েছে ‘স্মৃতি’। তার তা বইতে হচ্ছে নদীদের।

Advertisement

দুর্গাপুজো কালীপুজো পেরিয়ে ছটপুজোও শেষ৷ অথচ পাহাড়ের কোল থেকে নেমে আসা জয়ন্তী নদীর ধারে এখনও পড়ে রয়েছে দুর্গাপ্রতিমার কাঠামো৷ পরিত্যক্ত সেই কাঠামোগুলির অনেকগুলিতেই এখনও লেগে রয়েছে মাটি ও রং৷ অভিযোগ, জেলার বেশিরভাগ ছোট-বড় নদীই এখনও এ ভাবেই পুজোর ‘স্মৃতি’-কে সঙ্গী করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পরিবেশপ্রেমীদের অভিযোগ, আলিপুরদুয়ার জেলায় নদী দূষণের শুরুটা হয়েছিল প্রায় এক মাস আগে দুর্গাপুজোর সময় থেকেই৷ মাঝে কালীপুজো ও সাম্প্রতিক ছটপুজো সেই দূষণকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে৷

দশমীর দিন দুর্গাপ্রতিমার বিসর্জন শুরু হতেই কালজানি, নোনাই-সহ বিভিন্ন নদীর দূষণ নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল৷ বিভিন্ন মহল বিষয়টি নিয়ে সরব হতেই পুরসভার তরফে তড়িঘড়ি কাঠামো সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়৷ কিন্তু অভিযোগ, শহরের থেকে একটু দূরে বা তার থেকেও আরও দূরে নদীগুলির দিকে প্রশাসন কোনও নজরই দেয়নি৷ যার ফলে জয়ন্তীর মতই ওই নদীগুলির ধারেও এখনও পড়ে রয়েছে দুর্গাপ্রতিমার কাঠামো৷ তবে শুধু দুর্গাপ্রতিমার কাঠামোই নয়, নদীগুলিতে কালীপ্রতিমার কাঠামোও ভাসতে দেখা যাচ্ছে৷ আর সবশেষে ছটপুজোর পর সেই নদীগুলির জল অনেক অংশে দুর্গা ও কালী প্রতিমার কাঠামোর সঙ্গে কলাগাছ, ফুল, বেলপাতা-সহ পুজোর নানা উপকরণ দিয়ে কার্যত মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে৷

Advertisement

আলি্পুরদুয়ার জেলার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে প্রচুর ছোট নদী৷ যেগুলির অনেকগুলিই বিভিন্ন বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত৷ এই অবস্থায় নদীগুলির এমন দূষণে রীতিমতো চিন্তায় পরিবেশপ্রেমীরা৷ আলিপুরদুয়ারের পরিবেশবিদ অমল দত্তের অভিযোগ, “শহরাঞ্চলে নদীগুলির উপর সবার নজর থাকে৷ ফলে সেগুলি পরিষ্কারও দ্রুত হয়ে যায়৷ কিন্তু গ্রামাঞ্চলে ছোট নদীগুলির উপর কারও কোনও নজরই নেই৷ অথচ, বিভিন্ন বনাঞ্চলের ভিতর দিয়ে আসে এই নদীগুলি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ৷ ওই নদীগুলির দূষিত জল খেলে বন্যপ্রাণীদের অনেকটাই ক্ষতি হতে পারে৷ তাছাড়া ওই নদীগুলির জলের উপর প্রচুর মানুষও নির্ভরশীল৷ ক্ষতি হতে পারে তাদেরও৷ অথচ, নদীগুলিকে দূষণমুক্ত রাখতে প্রশাসনের হেলদোল নেই৷”

খোদ আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “জেলার সব নদীকে দূষণমুক্ত রাখতে গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে একাধিকবার জেলার সব বিডিও-কে বলা হয়েছে৷ তারপরও এমন অভিযোগ ওঠাটা দুর্ভাগ্যজনক৷” আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত জেলাশাসক কাজলকান্তি সাহা বলেন, “স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহায্যে নদীগুলিক দূষণমুক্ত রাখতে আমরা ফের বিডিও-দের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলব৷”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement