আম-মেলা মাত মালদহের হিমসাগর, ল্যাংড়ায়

মালদহের আমসত্ত্ব, আমের আচার, আম স্কোয়াস, আমের জ্যাম-জেলিও রয়েছে বিক্রির তালিকায়। 

Advertisement

জয়ন্ত সেন 

মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ০৪:০৬
Share:

মেলা-আম: দিল্লির আম-মেলায় মালদহের সম্ভার। —নিজস্ব চিত্র

আমের কত বাহার, কত স্বাদ-গন্ধ। কিন্তু তার মধ্যেও হিমসাগর আর ল্যাংড়ার যে মস্তানি বেশি, তা আর নতুন করে বলার কথা নয়। ১৬ জুন থেকে দিল্লির জনপথে ‘আম মেলা’-য় বাজিমাত করছে মালদহের সেই বিখ্যাত হিমসাগর আর ল্যাংড়াই।

Advertisement

গত তিন দিনে দেদার বিক্রি এই দুই আমের। তিন টন আম প্রায় শেষের পথে। মঙ্গলবারই ফের তিন টন আম রওনা দিয়েছে দিল্লির সেই মেলার উদ্দেশে। তবে কম যাচ্ছে না মালদহের লক্ষ্মণভোগ, আলতাপেটি, আশুদাগি, ক্ষীরভোগ, মিশরিকান্ত বা আম্রপালীর মতো আমও। এ সব আমেরও বিক্রি ভাল। সঙ্গে মালদহের আমসত্ত্ব, আমের আচার, আম স্কোয়াস, আমের জ্যাম-জেলিও রয়েছে বিক্রির তালিকায়।

জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছরের মত এবারও দিল্লির জনপথ হ্যান্ডলুম হাটে রাজ্য সরকারের দিল্লিস্থ রেসিডেন্ট কমিশনার দফতরের তরফে শুরু হয়েছে আম মেলা। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে সেই মেলা।

Advertisement

জেলা উদ্যানপালন দফতর ও মালদহ ম্যাঙ্গো মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে জেলার ৮ জন আম চাষি তাঁদের বাগানের আমের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছে সেই মেলায়। হিমসাগরের পাশাপাশি ল্যাংড়া, আম্রপলি, লক্ষণভোগ, ক্ষীরভোগ, আশুদাগী, আলতাপেটি, মিশরিকান্ত আম সেই মেলায় প্রদর্শনীর পাশাপাশি বিক্রি করছেন তারা। এ ছাড়া তাঁরাই সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন আমসত্ত্ব, আমের আচার সহ নানা উপাদানও। মেলায় হাজির থাকা মানিকচক ধরমপুরের আমচাষি পবন মণ্ডল বলেন, “আমি চার প্রজাতির আম নিয়ে এসেছি। কিন্তু বিক্রি বেশি হিমসাগর ও ল্যাংড়ারই। দুটি আমই এখানে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দিল্লির বাসিন্দা তো বটেই এমনকি দিল্লিতে বিভিন্ন রাজ্য থেকে যাঁরা ঘুরতে বা কাজে এসেছেন তাঁরা দেদার কিনছেন এই দুই আম।” এদিকে রতুয়া ২ ব্লকের আড়াইডাঙার আমচাষি দেবনারায়ণ ঘোষ নিয়ে এসেছেন রতুয়ার বিখ্যাত আশুদাগী থেকে শুরু করে হিমসাগর, লক্ষণভোগ ও আলতাপেটির মত আমও। তিনি বলেন, “আশুদাগীর উৎপাদন মালদহেই খুব কম। তবুও দিল্লির এই মেলায় নিয়ে এসেছি। দামও ভাল। ২০০ টাকা কেজি দর মিলছে। তবে হিমসাগরেরই চাহিদা মারাত্মক। পাশাপাশি সুগারের রোগীরা মিষ্টত্ব কম থাকা লক্ষ্মণভোগ আমও কিনছেন ১০০ টাকা কেজিতে।” মালদহ ম্যাঙ্গো মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, “অন্য জেলার আমও এই মেলায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু ক্রেতাদের কাছে মালদহের হিমসাগর ও ল্যাংড়ারই কদরই বেশি।” তিনি জানিয়েছেন, প্রথমে তিন টন আম এনেছিলাম। কিন্তু প্রথম দু’দিনেই প্রায় তিন টন আম বিক্রি শেষের পথে। ফের আরও তিনটন আনা হচ্ছে। এদিন মালদহ থেকে ট্রেনে সেই আম রওনাও দিয়েছে।

জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক রাহুল চক্রবর্তী বলেন, “দিল্লির এই মেলায় আমরা অন্তত ১৮ থেকে ২০ টন আম বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা রেখেছি। হিমসাগর ও ল্যাংড়া আমই মাত করেছে। আমগুলির ওজন এক-একটি ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রামের মধ্যে। গন্ধ যেমন, খেতেও তেমন মিষ্টি। তাই রসিকেরা দুই আমেরই কদর দিচ্ছে মেলায়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement