বাজারে ভিন্ রাজ্যের পাকা আম। নিজস্ব চিত্র
কবির ভাষায়, ‘আম পাকে বৈশাখে।’ কিন্তু বৈশাখ পড়লেও ‘আমের জেলা’ মালদহের বাজারে স্থানীয় আমের এবারে দেখা নেই। অথচ বৈশাখ মাসেই এই জেলায় সাধারণত মেলে বৈশাখী গুটি ও গোপালভোগ আম। তবে এখন জেলার বাজারে বিকোচ্ছে দক্ষিণ ভারতের বাঙ্গানপল্লি, গোলাপখাস বা তোতাপুরি। কিন্তু দাম চড়া হওয়ায় ওই আম কিনতে হাত পুড়ছে বাসিন্দাদের। জেলার পরিচিত প্রজাতির আম বাজারে আসতে আরও মাসখানেক সময় লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিকরা।
মালদহের আমগুলির মধ্যে বৈশাখী গুটি, গোপালভোগ, হিমসাগর, লক্ষণভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, আম্রপালি, মল্লিকা গোটা দেশ ও আন্তর্জাতিক বাজারে সুখ্যাতি কুড়িয়েছে। কিন্তু বৈশাখ এসে গেলেও দেখা নেই জেলার আমের। তার বদলে বিক্রি হচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশের বাঙ্গানপল্লি, গোলাপখাস কিংবা তোতাপুরি প্রজাতির আম। সেই সব আমের দাম আবার আকাশ ছোঁয়া। বাঙ্গানপল্লি আম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। গোলাপখাস ও তোতাপুরি আম বিকোচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা প্রতি কেজি দরে।
মালদহের রথবাড়ি বাজারে এই সব ভিন্ রাজ্যের আমের পসরা সাজিয়ে বসেছেন সাগর দাস। তিনি বলেন, ‘‘বাজারে এখনও দেখা নেই মালদহের স্থানীয় আম গোপালভোগ ও বৈশাখী গুটির। তাই বাজার দাপাচ্ছে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বহিরাগত আম। সেই আমের স্বাদ মালদহবাসীর মনের মতো না হলেও আমরা নিরুপায়।’’ এ দিকে, জেলার পাইকারি ফল বিক্রেতা গৌতম সাহা বলেন, ‘‘একেই অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আম আসছে। তার উপর জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় পরিবহণ খরচ বেশি পড়ছে জন্য ভিন্ রাজ্যের ওই আমের দাম বেশি পড়ছে।’’
ইংরেজবাজারের মকদুমপুরের বাসিন্দা অসিত সরকার বলেন, ‘‘বছরের প্রথম মরসুমের আম খেতে সকলেরই ভাল লাগে। কিন্তু দক্ষিণ ভারত থেকে আসা আমের দাম অত্যন্ত চড়া। সকলের পক্ষে কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।’’ জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক সামন্ত লায়েক বলেন, ‘‘মালদহের আম বরাবর একটু দেরিতে বাজারে আসে। সাধারণত এপ্রিলের শেষ বা মে মাসের শুরু থেকে মালদহের পাকা আম বাজারজাত হয়। কিন্তু এবার আবহাওয়াজনিত কারণে আমের ফলন আরও সপ্তাহ খানেক দেরি হতে পারে। যেহেতু দক্ষিণ ভারতের আমগুলি আবহাওয়ার কারণে আগে পেকে যায় তাই তাড়াতাড়ি বাজারে চলে আসে। মালদহেও এখন ওই প্রজাতির আম মিলছে।’’