তৃণমূল ভোট চাইলে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ২০০ কোটি টাকা কোথায় গেল সেই প্রশ্ন তোলার পরামর্শ দিলেন। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির নিউ কলোনি বয়েজ ক্লাবের মাঠে দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচার সভায় এ কথা জানিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম রাজ্যে নেতৃত্বের অন্যতম মানব মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতারা যখন বাড়ি গিয়ে ভোট চাইবে এসজেডিএ’র ২০০ কোটি টাকা কোথায় গেল হিসাব চাইবেন। কারা তার সঙ্গে যুক্ত ছিল জানতে চাইবেন। এসজেডিএ’র টাকা ওরা লুঠ করেছে। অথচ একবারও বলছে না ভুল হয়েছে। বলছে না দলের কেউ কেউ খারাপ। দেখুন আমরা তাদের তাড়িয়ে দিয়েছি। তৃণমূল এবং দুর্নীতি দুটিকে আলাদা করতে পারবেন না।’’
এসজেডিএ’র বিভিন্ন প্রকল্পে অন্তত ১০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে পুলিশে ৯টি অভিযোগ দায়ের করাও হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে। পুলিশ ওই অভিযোগে দফতরের তিন বাস্তুকার-সহ ১৪ জনকে গ্রেফতারও করে। তাঁরা জমিনে ছাড়া পেয়েছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা এসজেডিএ’র বর্তমান চেয়ারম্যান অবশ্য আগেই জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই এসজেডিএ’র অনিয়ম নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দলকে দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
এ দিন ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী রিতা ওঁরাওয়ের প্রচারে ওই এলাকায় জনসভায় গিয়েছিলেন মানববাবু। পরে আরও কয়েকটি ওয়ার্ডে জনসভায় অংশ নেন। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘এই সরকারের সাড়ে চার বছরে রাজ্য নারী নির্যাতনে সেরা হয়েছে। এই সরকার বিভিন্ন বাড়ি, অফিস নীল সাদা রং করেছে। কিন্তু শহরের উন্নয়নের মূল বুনিয়াদ অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য কোনও কাজ করেনি।’’ তাঁর দাবি, বামেদের আমলেই শিলিগুড়ি শহরের উন্নয়ন হয়েছে। এই শহর রাজ্যের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহরে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এই শহরে এসে বসবাস করতে শুরু করেছে। এই শহরে তাদের কর্মসংস্থান হয়েছে। দুইটি তথ্য প্রযুক্তি পার্ক চালু করে কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই সরকারের আমলে তা তুলে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তাঁর কথায়, কয়েকটি শিল্পোদ্যোগী মুখে ফিরিয়ে নিয়েছেন। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে বাসিন্দারা জনমজুরি করতে ভিন রাজ্যে চলে যাচ্ছেন। এই সরকারের আমলে শিলিগুড়িতে কোনও জল প্রকল্প হয়নি। শহর বাড়ছে। সে কথা মাথায় রেখে শহরের অশেপাশে উপনগরী প্রকল্প গড়তে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। এই সরকারের আমলে শহরের বাসিন্দাদের প্রয়োজনের কথা ভেবে কোনও জল প্রকল্পের কাজ এখনও করা হয়নি।