প্রতীকী ছবি।
ফের গণপিটুনি আলিপুরদুয়ার জেলায়। এ বার নিখোঁজ ভাইকে খুঁজতে গিয়ে নারী পাচারকারী অপবাদে গণপিটুনি দেওয়া হল দাদাকে। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শামুকতলা থানার রায়ডাক চা বাগানে। পুলিশ উদ্ধার করায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
আহত স্বপন সরকারের বাড়ি শামুকতলা থানার দক্ষিণ মজিদখানা গ্রামে। শিলিগুড়িতে দিনমজুরের কাজ করেন তিনি। শামুকতলা থানার ওসি বিরাজ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এক ব্যক্তিকে মারধর করা হচ্ছে শুনেই তড়িঘড়ি রায়ডাক চা বাগানে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’
আক্রান্ত স্বপন জানান, তিন মাস আগে তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন ভাই তপন সরকার নিখোঁজ হয়ে যান। তিনমাস ধরে হন্যে হয়ে খুঁজেও ভাইয়ের দেখা পাননি তিনি। তিনি জানান, দু’দিন আগে খবর পান পরিচিত এক ব্যক্তি তাঁর ভাইকে হাতিপোতার দিকে যেতে দেখেছিলেন। শুক্রবার তিনি হাতিপোতা-সহ বিভিন্ন এলাকায় খুঁজে সন্ধ্যার দিকে রায়ডাক চা বাগানে যান। চা বাগানের শ্রমিকদের কাছে তিনি জানতে চান তাকে কেউ দেখেছেন কি না। স্বপনের অভিযোগ, এরপরে তাঁকে নারী পাচারকারী অপবাদ দিতে শুরু করেন শ্রমিকদের একাংশ। ছুটে আসেন আরও কয়েকজন শ্রমিক। শুরু হয় মারধর। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁকে গণপিটুনির হাত থেকে বাঁচিয়ে শামুকতলা হাসপাতালে নিয়ে যান।
স্বপন বলেন, ‘‘সারা হাত পায়ে প্রচণ্ড যন্ত্রণা। সময় মতো পুলিশ না এলে আমাকে ওরা প্রাণে মেরে ফেলতো। হঠাৎই কিছু বুঝে ওঠার আগেই এ ভাবে আমাকে মারধর শুরু করবে ভাবতে পারিনি। গত তিন মাস ধরে ভাইয়ের খোঁজ করতে গিয়ে ওখানে গিয়ে পড়ি। সে সব কোনও কথা না শুনেই আমাকে মারধর করা শুরু হয়।’’ তিনি জানান, অভিযুক্তরা তাঁর সাইকেলও কেড়ে নেয়। তাঁর দাবি, যারা তাঁকে মারধর করল তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
এর আগে আলিপুরদুয়ার জেলারই পাটকাপাড়ায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। তারপরে জেলারই অন্য জায়গায় এমন ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আক্রান্ত স্বপনের পাশে দাঁড়ান শামুকতলা ব্যবসায়ীরা।