বাগডোগরা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
এ বারের সফরে পাহাড় নেই। যদিও, সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফর শুরুই হল পাহাড়ের ভূজেল সম্প্রদায়ের জন্য বোর্ড গড়ার আশ্বাস দিয়ে। গত কয়েক বছরে মুখ্যমন্ত্রী যতবারই বিমানে উত্তরবঙ্গ পৌঁছেছেন, বাগডোগরা বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে লেপচা-তামাঙ্গ সহ পাহাড়ের বিভিন্ন জনজাতি, সম্প্রদায়ের সংগঠনের সদস্যরা ছিলেন।, প্রতিবারই কোনও না কোনও সংগঠন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বোর্ড চেয়ে দাবি জানিয়েছেন, আশ্বাসও পেয়েছেন। তবে এ দিন খানিকটা ব্যতিক্রমী দৃশ্যই দেখলেন উপস্থিত আধিকারিকরা। বিমানবন্দরের লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে বাইরে ভূজেল সংগঠনের সদস্যদের খাদা নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এগিয়ে যান। সংগঠনের নেতাদের প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনাদের বোর্ডটা এখনও হয়নি না?’’ তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চিন্তা করবেন না। আমি দেখছি।’’
ভূজেল ছাড়াও কামি, বিশ্বকর্মা, তামাঙ্গ বোর্ডের প্রতিনিধিরাও এ দিন বিমানবন্দরে ছিলেন। তাদের অনেকের হাতে তৃণমূলের পতাকাও দেখা গিয়েছে। ভূজেল সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কুমার খাওয়াস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আগেও বোর্ডের দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম। তবে এ দিন তিনি নিজেই আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। জিটিএ কোনও কাজ করছে না। তাই বোর্ড গড়ে নিজেরা কাজ করতে চাইছি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় বিমানবন্দর চত্বর ছাড়ার পরে বিমানবন্দর চত্বরে দাঁড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ ঢাক-ঢোল বাজিয়ে উচ্ছাসও করেন সংগঠনের নেতারা।
মুখ্যমন্ত্রীর গত মাসের পাহাড় সফরে নতুন কয়েকটি বোর্ড গঠনের ঘোষণাকে কেন্দ্র করেই রাজ্যের সঙ্গে সংঘাত-হুমকির পথ নিয়েছেন জিটিএ-এর চিফ তথা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রধান বিমল গুরুঙ্গেরা। গত মাসে দার্জিলিঙের ম্যাল চৌরাস্তায় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে নতুন তিনটি বোর্ড গঠনের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে দিনের মঞ্চে ছিলেন গুরুঙ্গও। একের পর এক সম্প্রদায়ের জন্য বোর্ড গঠন করে জিটিএ-কে অচল করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করে আগামী দু থেকে আড়াই মাসের মধ্যে ইস্তফা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন গুরুঙ্গ। জিটিএ-এর চিফের পদ ছেড়ে নতুন করে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন শুরুর কথা জানিয়েছেন গুরুঙ্গ।
সব ঠিক থাকলে চলতি বছরেই পাহাড়ের পুরসভাগুলির এবং জিটিএ-র বোর্ডের ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে একাধারে সংগঠন মজবুত করা এবং রাজ্যের ওপর চাপ বাড়াতে ফের গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে মোর্চা হাওয়া তুলতে চাইছে বলে মনে করছে পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতারা। অন্যদিকে, গত বিধানসভাতে পাহাড়ে তৃণমূলের ভোট বেড়েছে। কালিম্পং, দার্জিলিং, মিরিক পুরসভার বেশ কিছু ওয়ার্ডে বিধানসভা ভোটের নিরিখে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে। এই সাফল্যের কারণ হিসেবে বিভিন্ন বোর্ড গড়ার আবদানও রয়েছে বলে তৃণমূল নেতাদের দাবি। ইতিমধ্যে পাহাড়ে ১১টি বোর্ড গঠন এবং ঘোষণা করেছে রাজ্য। আগামী বুধবার পাহাড়ে সভা করতে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে পাঠাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।
জেল ছাড়াও কামি, বিশ্বকর্মা, তামাঙ্গ বোর্ডের প্রতিনিধিরাও এ দিন বিমানবন্দরে ছিলেন। তাদের অনেকের হাতেও তৃণমূলের পতাকা দেখা গিয়েছে। ভূজেল সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কুমার খাওয়াস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আগেও বোর্ডের দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম। তবে এ দিন তিনি নিজেই আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। জিটিএ কোনও কাজ করছে না। তাই বোর্ড গড়ে নিজেরা কাজ করতে চাইছি।’’ ভূজেলদের নেতা কুমারবাবু বছরখানেক ধরে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করলেন।