ভুট্টা থেকে ডাল, লক্ষ্যে সবই
Agriculture Hub

শিল্প পার্কে কৃষির ঘর চান মমতা

আমবাড়ি ফালাকাটায় বাণিজ্যিক পার্কে এবং মেখলিগঞ্জে মেজ় পার্ক করার কথা ভাবা হয়েছে। দ্রুত প্রকল্প শুরু করতে চান। ডাল মিলের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন বাণিজ্যিক পার্কের মধ্যেই সেটিকে রাখতে। ডালের দামও বেশি। খেসারি ও অন্যান্য ডালের বিষয়টি রাখতে বলেন তিনি।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

উত্তরবঙ্গের অর্থনীতিতে কৃষি এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পের সম্ভাবনা রয়েছে। এ বার সে দিকেই জোর দিতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে তিনি জানান, দার্জিলিঙে উদ্যান পালন দফতর অর্কিড চাষ করাচ্ছে। কিন্তু কোচবিহার বা অন্যত্র আর কী হতে পারে, সেটাও দেখতে হবে। সেই মতো ভুট্টা থেকে স্টার্চ, কনফ্লেক্স জাতীয় খাদ্য, আটা, পশুখাদ্য তৈরিতে ‘মেজ় পার্ক’, খেসারি ও অন্যান্য ডাল উৎপাদনে ডাল মিল গড়ার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য কৃষির উন্নয়নে একটি ‘জিনোম গবেষণা’ কেন্দ্র করার প্রস্তাব দিলে, তাকেও স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বলেন, ‘‘আপনারা নতুন কী কী ভাবছেন, সেটা দেখতে হবে। কৃষিতে নতুন উদ্ভাবন দরকার।’’

Advertisement

মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানান, ভুট্টার জন্য ‘মেজ় পার্ক’ নিয়ে মঙ্গলবারই সিআইআই, কৃষি বিপণন, ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। আমবাড়ি ফালাকাটায় বাণিজ্যিক পার্কে এবং মেখলিগঞ্জে মেজ় পার্ক করার কথা ভাবা হয়েছে। দ্রুত প্রকল্প শুরু করতে চান। ডাল মিলের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন বাণিজ্যিক পার্কের মধ্যেই সেটিকে রাখতে। ডালের দামও বেশি। খেসারি ও অন্যান্য ডালের বিষয়টি রাখতে বলেন তিনি। কলকাতায় একটি ডাল পার্ক হচ্ছে। তার সঙ্গে এটি যুক্ত করতেও নির্দেশ দেন।

মুখ্যসচিব জানান, কৃষিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত করা দরকার। তা না থাকায় যেমন ভুট্টা চাষ বেশি হলেও তা থেকে শিল্প হচ্ছে না। এ দিনই মুখ্যসচিব পদ থেকে অবসর নিলেন রাজীব সিংহ। তিনি রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাই তাঁকেই বিষয়টি দেখে নিতে বলেন। সিআইআইয়ের উত্তরবঙ্গের ভাইস চেয়ারম্যান সঞ্জয় টিবরেয়াল জানান, ভুট্টা, ডাল পার্ক প্রকল্পে তাঁরাও সহযোগিতা করবেন। উদয়ন গুহ জানান, আগে খেসারি ডালে এক ধরনের অম্লজাতীয় পদার্থ থাকত। এখন ‘নির্মল ভ্যারাইটি’র খেসারি ডাল চাষ হয়। মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যসচিবকে বলেন, ‘‘এই ডালের বীজটিকে কৃষি দফতর যেন চাষে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’’

Advertisement

জিনোম সেন্টার নিয়ে উপাচার্যকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি এটা করার জন্য নির্দেশ দিয়ে গেলাম। আপনারা কৃষি দফতরকে লিখুন।’’ কৃষি পণ্য এবং তা নিয়ে শিল্প গড়তে ‘রুরাল অন্থ্রপ্রনর হাব’ করা হচ্ছে বলে জানান মুখ্যসচিব। তার মাধ্যমে এলাকা ভিত্তিতে বড় এলাচ, গোলমরিচ, আদা, তুলসী চাষ, ফুলঝাড়ু তৈরি এবং তা অন্যত্র সরবরাহের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কোচবিহার, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর— সব জায়গাতেই এ ধরনের ‘গ্রুপ’ করা হচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ১ লক্ষ লোককে সামিল করার পরিকল্পনা রয়েছে।

পশু পালনের বিষয়টিও গুরুত্ব দিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহারের সহ-সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া জানান, এনআরজিএস থেকে ক্যামবেল হাঁস এবং সোনালি মুরগি করতে পারলে ভাল হয়। এই বিষয়টিও মুখ্যসচিবকে দেখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সংশ্লিষ্ট মহলের কথায়, কেন্দ্র যখন কৃষি আইন করে চাষিদের ‘বিপদে’ ফেলছে বলে অভিযোগ, তখন তিনি যে চাষিদের ফসলকে শিল্পের ঘরে জায়গা দিয়ে নতুন সুযোগ তৈরি করছেন, সেটাই দেখাতে চান মুখ্যমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement