জলপাইগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
ঝড়ের কারণে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে ছোট বড় মিলিয়ে মোট পাঁচ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়া বেশ কিছু চাষের জমিতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন বিষয়টি দেখছে বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। জারি রয়েছে আদর্শ আচরণবিধি। তার মাঝে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে কোনও ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করতে পারেন না মুখ্যমন্ত্রী। তবে জরুরি পরিস্থিতিতে তাঁর প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারে।
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির চালসার গৌরীগ্রাম এলাকার মার্সি ফেলোশিপ চার্চের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে তাঁর সঙ্গে দেখা করে যান গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সুপ্রিমো অনিত থাপা। সেই বৈঠকের পরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা। ঝড় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মমতা বলেন, ‘‘পাঁচ হাজার বাড়ি নষ্ট হয়েছে। কোনও কোনও বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কোনও বাড়ি অর্ধেক ভেঙেছে, আবার কোনও বাড়িতে অল্প ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে পাঁচ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ঝড়ে। আমি এই দু’দিনে সেটাই দেখছিলাম। তিন জেলা নিয়েই প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা হয়েছে। বেশ কিছু চাষের জমিও নষ্ট হয়েছে। প্রশাসন সেগুলো দেখবে।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে চা বাগানের কর্মীদের সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, ‘‘এখানে বহু চা বাগান আছে, যেখানে ওঁরা ছোট ছোট ফার্মিং করেন। কেন্দ্র তা বন্ধ করে দিয়েছে। মালিকদের বলে ওঁদের থেকে চা কেনা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমি মলয়কে (মন্ত্রী মলয় ঘটক) বলেছি, ও এসে বৈঠক করবে। আমরা চা শ্রমিকদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করব। পাট কেনাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাট শিল্পে বাংলা এক নম্বর। আমি এটা বন্ধ হতে দেব না।’’ এ বিষয়ে অনিতের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, রবিবার বিকেলে ঘূর্ণিঝড়ে জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে পাঁচ জন মারা গিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। আহতের সংখ্যা শতাধিক। রবিবার রাতেই জলপাইগুড়ির উদ্দেশে রওনা দেন মমতা। ঘুরে দেখেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। মৃতদের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। হাসপাতালে গিয়ে নিজে আহতের খোঁজ নেন। তার পর থেকে উত্তরবঙ্গেই রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ৬ তারিখ পর্যন্ত তিনি সেখানেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন।