ডেঙ্গি আবহে মশার বংশবিস্তার রুখতে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল চত্বরে জঙ্গল কাটার কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
জেলা জুড়ে সাফাই অভিযান, সচেতনতা মিছিল-প্রচার সবই চলছে। কিন্তু পুজোর আবহেও মালদহে ডেঙ্গির প্রকোপ রীতিমতো উদ্বেগজনক। গত এক সপ্তাহে জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩৯২ জন। জেলা সদর ইংরেজবাজার শহরেই আক্রান্ত ১০৯ জন। উত্তর দিনাজপুরেও ডেঙ্গি বাড়ছে। সে কথা মাথায় রেখেই পুজোর সময় জেলায় চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল করে ‘রস্টার ডিউটি’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
মালদহ জেলায় এ বছরে জুন মাস থেকে ডেঙ্গির সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। প্রকোপ ঠেকাতে স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসন যৌথ ভাবে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। জেলার ১৫টি ব্লক ও দুটি পুরসভা এলাকায় বিশেষ সাফাই অভিযান থেকে শুরু করে, বাড়ি-বাড়ি সচেতনতা প্রচার, মাইকে প্রচার সবই করা হচ্ছে। কিন্তু তার পরেও ডেঙ্গির সংক্রমণ না কমায় উদ্বেগ বেড়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’সপ্তাহ মালদহে জেলায় সাত দিনে ৩৬২ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর গত সপ্তাহে এ বছরের রেকর্ড সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন, তা ৩৯২ জন। ফলে জেলায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ২৩৮০ জন। তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “বৃষ্টি কমে যাওয়ায় ডেঙ্গির প্রকোপ কমবে বলে আমরা আশাবাদী।” জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “ডেঙ্গি মোকাবিলায় আমরা সাফাই অভিযানে জোর দিয়েছি। জল যাতে কোথাও জমে না থাকে, সে দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।”
উত্তর দিনাজপুরে পুজোর ছুটির সময়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল-সহ জেলার গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল করে এবং ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তাঁদের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নির্দেশিকাও জারি করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ডেঙ্গি সংক্রমণ যাতে কোনও ভাবেই হাতের বাইরে না চলে যায়, সে কারণেই এমন নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণকুমার শর্মা বলেন, “নজরদারি দলগুলিকেও সক্রিয় থাকতে বলা হয়েছে। সচেতনতায় জোর দেওয়া হচ্ছে।” জেলা প্রশাসন সুত্রে খবর, ডেঙ্গি মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত সব কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।