—নিজস্ব চিত্র।
কাজে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি বাবা। সে প্রায় ১৫ বছর আগেকার কথা। তার পর থেকে বছর পর বছর ঘুরলেও বাবার খোঁজ পাননি ছেলে। তবে এত বছর পর হোয়াটসঅ্যাপ মারফত সন্ধান মিলল ওই ব্যক্তির। বুধবার মালবাজারের বাড়িতে ফিরে এসেছেন চাম্পা ওঁরাও।
পরিবার সূত্রে খবর, ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে নিখোঁজ হয়েছিলেন চাম্পা। নিউ জলপাইগুড়ির মালবাজারের চাম্পা বাসিন্দা স্থানীয় একটি চা বাগানে শ্রমিক ছিলেন। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করলেও তাঁর হদিশ মেলেনি। ঘটনার প্রায় মাস তিনেক পরে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাড়িতে ফোন করে চাম্পা জানান যে তিনি পঞ্জাবে রয়েছেন। সেখানে ট্র্যাক্টর চালানোর কাজ করছেন।
সেই শেষ বারের মতো চাম্পার সঙ্গে তাঁর পরিবারের সদস্যদের কথা হয়েছিল। এর প্রায় ১৫ বছর ধরে তাঁর সঙ্গে পরিজনদের যোগাযোগ হয়নি।
দিন কয়েক আগে হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর ঘাটে ভবঘুরেদের সঙ্গে এক অসুস্থকে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বৈদ্যনাথ পাঠক নামে এক স্বেচ্ছাসেবক জানিয়েছেন, ভবঘুরেদের খাবার দিতে এসে তিনি দেখেন গুরুতর অসুস্থ এক ব্যক্তির উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা পর্যন্ত নেই। এমনকি, কথাও বলতে পারছেন না তিনি। এর পর সৌরভ দাস নামে স্থানীয় এক চিকিৎসকের মাধ্যমে তার চিকিৎসা বন্দোবস্ত করানো হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানার চেষ্টা করেন চিকিৎসক। নিজের নাম বলতে না পারলেও মালবাজারে তাঁর বাড়ি বলে জানাতে পারেন ওই ব্যক্তি। ছেলে কিরণ ওঁরাওয়ের নামও জানান তিনি। সেই সূত্র ধরেই মালবাজারের একটি চা বাগানে কর্মরত এক পরিচিতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই চিকিৎসক। এর পর বিভিন্ন সূত্র মারফত হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির ছবি পাঠিয়ে ওই ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
খবর পেয়ে বুধবার সকালে হাওড়ায় ছুটে আসেন চাম্পার ছেলে কিরণ। এত বছর পরে বাবাকে ফিরে পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই আনন্দিত কিরণ। খুশিতে ভাসছে পরিবারও। বুধবার সন্ধ্যার ট্রেনেই মালবাজারে নিজের বাড়িতে ফিরবেন চাম্পা।