ক্ষোভ মেটাতে রাড়িয়াগ্রামে গেলেন দীপা

দিন কয়েক আগে কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি গ্রামে গ্রামে প্রচারে গেলেও কোথাও না দাঁড়িয়ে, কারও সঙ্গে কথা না বলে গ্রামের রাস্তা ধরে সোজা গাড়ি চালিয়ে বেরিয়ে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯ ০৮:২১
Share:

রাড়িয়ায় খুদেকে কোলে তুলে নিলেন দীপা দাশমুন্সি। ছবি: সন্দীপ পাল

রায়গঞ্জ শহর লাগোয়া রাড়িয়াগ্রামের খোঁজখবর কেউ করছেন না, বাসিন্দাদের এমন ‘অসন্তোষের’ আঁচ পেয়েই ফের সেখানে প্রচারে গেলেন কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি। বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় রোড-শো করার সময়ে গাড়ি দাঁড় করিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে হাত মেলান তিনি। কখনও বাসিন্দারা গাড়ির কাছে ভিড় করেছে দেখে তাঁদের সঙ্গে কথাও বললেন, খোঁজখবর নিলেন। কখনও আবার মায়ের কোল থেকে শিশুকে নিজের কোলে তুলে আদর করলেন। এক সময়ে কংগ্রেসের গড় ওই এলাকার বাসিন্দারা অনেকদিন পরে প্রিয়জায়াকে এ ভাবে পেয়ে খুশি।

Advertisement

অভাবের তাড়নায় যে গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ পাচার চক্রের ফাঁদে পড়ে কিডনি বিক্রি করছিলেন, ভোটের সময়ে কেউ সেই রাড়িয়া এবং লাগোয়া এলাকার খোঁজখবর করছিলেন না বলে অভিযোগ উঠছিল। এমনকী, বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ভোটের প্রচারও ছিল না রায়গঞ্জ শহর লাগোয়া বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রাড়িয়া, সিজগ্রাম, গৈতর এলাকাগুলিতে। দিন কয়েক আগে কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি গ্রামে গ্রামে প্রচারে গেলেও কোথাও না দাঁড়িয়ে, কারও সঙ্গে কথা না বলে গ্রামের রাস্তা ধরে সোজা গাড়ি চালিয়ে বেরিয়ে যান। জানা যায়, বাসিন্দাদের কয়েকজন রাড়িয়া হাটখোলার কাছে তাঁর জন্য দাঁড়িয়েও ছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস প্রার্থী গাড়ি দাঁড় না করিয়ে চলে যাওয়ায় তাঁদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। কংগ্রেসেরই একটি সূত্রের খবর, বিষয়টি আঁচ করেই এ দিন দীপা দাশমুন্সি ফের ওই এলাকায় প্রচারে যান।

গ্রামের রাস্তার এক ধারে রাড়িয়া, অপর দিকে গৈতর এলাকা। গৈতরের বাসিন্দা রাড়িয়ার হাটখোলা এলাকার দোকানদার কার্তিক সরকার বলেন, ‘‘আগেরদিন কংগ্রেস প্রার্থী না দাড়িয়েই চলে যান বলে অনেকে হতাশ হয়েছিলেন। এ দিন প্রচারে এসে অবশ্য গাড়ি দাঁড় করিয়ে এলাকার মহিলা, অন্য বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন দীপা। হাতও মেলান। বাসিন্দারা খুশি।’’ রাড়িয়ার বাসিন্দা শান্তিরাম মোদকের কথায়, ‘‘প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি যে এই জেলার জন্য অনেক কিছু করেছেন, তা মানতেই হবে। তিনি থাকলে আরও অনেক কিছু হত। তাই কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে অনেক মানুষের প্রত্যাশা রয়েছে। সেটা তো বুঝতে হবে।’’ গত দুই দশকের মতো কংগ্রেসের ঘাঁটি গত পঞ্চায়েত ভোটেও বিজেপি দখলে নিয়েছে।

Advertisement

এ দিন গ্রামের একটি হরিসভার কাছে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ধীরেন সরকার, শিখা সরকারদের মতো বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস প্রার্থী দীপাকে। ভোটে জেলার জন্য তাঁদের আশীর্বাদও চান তিনি। প্রার্থীকে এ ভাবে কাছে পেয়ে অনেকেই তাই ভরসাও জুগিয়েছেন। শিখা, অমলা বিশ্বাসেরা জানান, এ দিন কংগ্রেস প্রার্থীকে কাছে পেয়ে তাঁরা খুশি। অনেকেই হাত মিলিয়েছেন।

তবে শুধু কংগ্রেসই নয়, বিজেপি, তৃণমূলের মতো দলের তরফেও প্রার্থীদের কেউ এলাকায় যাননি দেখে ক্ষোভ জমেছিল বাসিন্দাদের মধ্যে। এ দিন তৃণমূলের লোকজন গিযে বিভিন্ন এলাকায় তাদের প্রার্থীর হয়ে প্রচার চালান। ফেস্টুন, দলের পতাকা লাগান গ্রামে। বিজেপি প্রার্থীর প্রচার হোর্ডিংও লাগানো হয়েছে একদিন আগেই। পাচারচক্রের ফাঁদে পড়ে কিডনি বিক্রি করেছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে ভুপেন রায়, মানিক বর্মণেরা বললেন, ‘‘দারিদ্রের জন্য গ্রামের মানুষ খুব কষ্টে রয়েছে। যারা দু’ দিন পর জনপ্রতিনিধি হবে, তারা যদি গ্রামে না আসে, বাসিন্দাদের খোঁজখবর না নেয়, তা হলে মানুষই বা ভরসা পাবে কী করে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement