বিতর্কিত গোবিন্দই বাম-প্রার্থী

শুক্রবার বিকেলে কলকাতায় বামেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়। সে সময় কোচবিহার জেলা পার্টি অফিসেই ছিলেন গোবিন্দবাবু। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকারের কাজে  মানুষ ক্ষুব্ধ। বেকারের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। দুর্নীতি ডুবে গিয়েছে সরকার। তাই এ বার বামেদেরই পছন্দ করবেন মানুষ।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০৮:১৩
Share:

গোবিন্দ রায় (এআইএফবি)।

একসময় তাঁর বিরুদ্ধে আলু কেনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। সেই ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা গোবিন্দ রায়কে কোচবিহার আসনে প্রার্থী করল বামেরা। আগামী ১১ এপ্রিল প্রথম দফার ভোটে তাঁকে লড়তে হবে তাঁরই একসময়ের সহযোগী পরেশ অধিকারীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

শুক্রবার বিকেলে কলকাতায় বামেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়। সে সময় কোচবিহার জেলা পার্টি অফিসেই ছিলেন গোবিন্দবাবু। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকারের কাজে মানুষ ক্ষুব্ধ। বেকারের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। দুর্নীতি ডুবে গিয়েছে সরকার। তাই এ বার বামেদেরই পছন্দ করবেন মানুষ।’’ কোচবিহার আসন নিয়ে তিনি আশাবাদী বলেও জানিয়ে দেন। বাম বিরোধীরা অবশ্য দাবি করেছেন, আলুবীজ কেলেঙ্কারি নিয়ে যা ঘটেছে তার পরে আর কেউ গোবিন্দকে ভোট দেবেন না।

এ দিন গোবিন্দ বলেন, ‘‘রাজ্যে পরিবর্তনের পরে বাম নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যে মামলা দিয়ে চাপে ফেলে দলে টানার চেষ্টা করে তৃণমূল। আমার নামেও ওই মিথ্যে মামলা করা। আরও অনেককে প্রলোভন দেখানো হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘হয়রানির শিকার হলেও কিন্তু ভয় পাইনি। প্রলোভন দেখিয়েই লাভ হয়নি।” পাল্টা আক্রমণ করে গোবিন্দ বলেন, ‘‘তৃণমূল যাকে প্রার্থী করেছে, তিনি প্রলোভনেই ওই দলে গিয়েছেন। শাসক দলে যোগ দিয়ে তিনি কী পেয়েছেন, তা-ও সবাই জানে।’’ পরেশ অধিকারীকে কটাক্ষ করে গোবিন্দ বলেন, “দলবদলেরও একটা সীমা থাকে। ইনি তো ছ’মাস হল দলবদল করেছেন। তাঁদের মহাসচিব বলেছেন, তৃণমূল তিন প্রকার। তারই একটি তৎকাল তৃণমূল।”

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তৃণমূলের কোচবিহার জেলার প্রার্থী পরেশ অধিকারী এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, “চমক দেওয়ার জন্য এখন অনেকেই অনেক কথা বলবেন। তার কোনও মানে হয় না। ভোটেই সব প্রমাণিত হবে।”

গোবিন্দ এবং পরেশ দীর্ঘসময় একই সঙ্গে ফরওয়ার্ড ব্লক করেছেন। গোবিন্দর বাড়ি জলপাইগুড়ির বেরুবাড়িতে। তিনি ২০০১ সালে জলপাইগুড়ির বিধায়ক ছিলেন। ১৯৯৮ সালে সমাজতান্ত্রিক ফরওয়ার্ড ব্লকের হয়ে কোচবিহার লোকসভা আসনে লড়াই করেছিলেন। রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১২ সালে তাঁর বিরুদ্ধে আলু বীজ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অলোক রায় নামে এক ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মী গোবিন্দ রায় এবং তাঁর স্ত্রী সবিতা রায়ের নামে আলিপুরদুয়ার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল, ২০১০ সালে অত্যাধিক আলুর ফলনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহকারী দফতর থেকে নবদিগন্ত সমবায় সংস্থাকে আলু কেনার বরাত দেওয়া হয়। সবিতা ওই সমবায় সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই সময় জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ছিলেন গোবিন্দ। তিনি তাঁর স্ত্রীয়ের সমবায় সংস্থাকে ঋণ দেন বলে অভিযোগ ওঠে। আলু কেনার মাস্টাররোলে দেখা যায়, এক ব্যক্তি একাধিক চাষির নামে সই করেছেন। ওই মামলায় দীর্ঘসময় ফেরার ছিলেন গোবিন্দ ও তাঁর স্ত্রী। তিনি অবশ্য এ দিন বলেন, “মিথ্যে মামলা করা হয়েছিল তা সবাই জানে।”

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “বাম ও তৃণমূল এখন একই। দুর্নীতিতে ডুবে যাওয়া ওই দুই দলের প্রার্থীকে কেউ ভোট দেবে না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement