আলিপুরদুয়ারে প্রচারের প্রস্তুতি বিজেপির। ছবি: নারায়ণ দে
প্রার্থী ঘোষণা হতেই তৃণমূল ও বামফ্রন্টের নেতা-কর্মীরা জোরকদমে প্রচারে নেমে পড়েছেন৷ অথচ, বিজেপি এখনও প্রার্থীই ঘোষণা করতে পারেনি৷ এই অবস্থায় আজ থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া শুরু হতে চললেও, উত্তরবঙ্গে নিজেদের অন্যতম শক্তঘাটি বলে দাবি করা আলিপুরদুয়ারে প্রচারেই নামতে পারছেননা দলের নেতা-কর্মীরা৷ এর জেরে নীচু তলার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা ছড়াতে শুরু করেছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর৷ লোকসভা নির্বাচনের আগে ওই কর্মী-সমর্থকদের উপর সেই প্রভাব পড়ে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আলিপুরদুয়ারের গেরুয়া শিবিরের অনেকে৷
২০১১সালে রাজ্যে পালাবদলের পরও অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার অংশ হিসাবে আলিপুরদুয়ারে বামেদের শক্তি বেশ ভালই ছিল৷ ২০১৩সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এগিয়ে ছিল বামেরাই৷ এমনকি ওই বছর, পুর নির্বাচনেও আলিপুরদুয়ার পুরসভায় কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে বোর্ড গঠন করে বামেরা৷ কিন্তু ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আরএসপি থেকে আসা দশরথ তিরকেকে দাঁড় করিয়ে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে বাজিমাত করে তৃণমূল৷ বামফ্রন্টের আরএসপি প্রার্থী মনোহর তিরকেকে একুশ হাজারেরও বেশি ভোটে পরিজিত করেন দশরথ৷ কিন্তু ওই নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী ঝড় তুলে বাম প্রার্থীর চেয়ে মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজারের মত কম ভোট পেয়ে থামেন বিজেপি প্রার্থী৷
আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে এ বারও দশরথকেই প্রার্থী করেছে তৃণমূল৷ কিন্তু এবারের নির্বাচনে পরিস্থিতি আলাদা৷ রাজনৈতিক নেতাদের কথায়, এ বার আর বামেরা নয়, তৃণমূলের মূল প্রতিপক্ষ বিজেপি৷ অথচ, আজ সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শুরু হতে চললেও এখন এই কেন্দ্রে প্রার্থী কে হবেন সেটাই ঘোষণা করতে পারেননি বিজেপি নেতৃত্ব৷ বিজেপি সূত্রের খবর, এর ফলে নিচুতলার নেতা-কর্মীরা অনেকেই হতাশ৷ অনেকের মধ্যে ক্ষোভও জন্মাচ্ছে৷ আশপাশে তৃমমূলের নেতা-কর্মীরা দেওয়াল লিখন থেকে শুরু করে প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নেমে পড়লেও, তারা তা করতে না পেরে অনেক বিজেপি নেতা-কর্মীই জেলা শীর্ষ নেতাদের দ্রুত নাম ঘোষণার দাবি জানিয়ে ফোন করছেন বলে দল সূত্রের খবর৷ খোদ বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘ভোটের অনেক আগে থেকেই আমরা প্রচার শুরু করেছি৷ কিন্তু এই সময়ের প্রচারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ অথচ, দলের নীচুতলার নেতা-কর্মীরা প্রার্থীর নামই জানেন না৷ তাহলে প্রচার করবেন কার কথা বলে?’’ আরেক নেতা বলেন, আশা করছি সোমবাই প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়ে যাবে৷ তারপরই ফের ময়দানে ঝাপিয়ে পড়বেন সব স্তরের নেতা-কর্মীরা৷
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা অবশ্য বলেন, ‘‘কর্মীরা কেউ হতাশও নন, কারও ক্ষোভও নেই৷ যাঁরা আমাদের প্রার্থী নিয়ে জিজ্ঞাসা করছেন তাঁদের বলছি, দলীয় প্রতীক চিহ্নের কথা বলে মানুষের কাছে যেতে৷ তাঁরা সেটাই করে চলেছেন৷’’