মদের দোকান বন্ধ। কিন্তু, সে সব দোকানের আশেপাশে থাকা ‘চাট’-এর দোকানপাট চলছে বহাল তবিয়তে। কী ভাবে?
স্থানীয় লোকজন বলছেন, সৌজন্য, ভ্রাম্যমান মদের দোকান। নেশার দুনিয়ায় যাকে আদর করে এমওএস (মোবাইল অফ-শপ) বলে ডাকা হচ্ছে। তাতেই ফস্কা গেরো-র প্রবাদ মনে পড়ে যাচ্ছে অনেকের। শিলিগুড়ির তিনবাতি মোড় থেকে ধূপগুড়ি, ফালাকাটা কিংবা রায়গঞ্জ থেকে মালদহ— প্রায় সর্বত্রই একই অভিযোগ।
যে সব পানশালা বন্ধ হয়েছে, তার মালিকদের কয়েক জন জানান, জাতীয় সড়কের ধারে রিকশা, মারুতি ভ্যান, টোটোই এখন মদের ঠিকানা। এক পানশালা মালিক বলেন, ‘‘দোকান বন্ধ হলেও জাতীয় সড়কের ধারে মদ বিক্রি তো বন্ধ হয়নি। কিন্তু হাত গুটিয়ে সব দেখতে হচ্ছে।’’
এই অভিযোগ পৌঁছেছে পুলিশ-আবগারি দফতরেও। সরকারি সূত্রের খবর, কারবারিদের ধরতে গেলেই সন্দেহভাজন গাড়িটি জাতীয় সড়কের ধারের কোনও গ্রাম বা শহরের গলিতে মিলিয়ে যাচ্ছে। উত্তরবঙ্গের আবগারি দফতরের একাধিক জেলা অফিসার জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে জাতীয় সড়কের ৫০০ মিটারের মধ্যে থাকা মদের দোকান, পানশালা বন্ধ হওয়ার পরে কালোবাজারি রুখতে রোজই অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গ জুড়ে বহু শতাধিক মদের বোতল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আবগারি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কর্মী-অফিসারের সংখ্যা কম। ফলে, রাতভর অভিযান চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেক জায়গায় দোকান-পানশালার কর্মীদের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হচ্ছে।’’
উত্তরবঙ্গে পানশালা ও মদের দোকান মালিকদের সংগঠন নর্থ বেঙ্গল ফরেন লিকার্স সেলারস অ্যান্ড হোটেল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ননী অধিকারী জানান, তাদের সদস্য সংখ্যা প্রায় ১১০০। অর্ধেকের বেশি দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার কর্মী বেকার হয়ে পড়েছেন। বিকল্প কর্মসংস্থানের উপায় খুঁজতে মালিকপক্ষের উপরে চাপ বাড়াচ্ছেন তাঁরা। কেন? অভিযোগ সেই এক। ননীবাবু বলেন, ‘‘নানা কায়দায় মোবাইল অফ শপ চলছে। দেখতেই তো পাচ্ছে সকলে!’’ মদের দোকানের কর্মহীন শ্রমিকরা জানালেন, তাঁরা আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।