—প্রতীকী চিত্র।
জলে ‘বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড’ (বিওডি) দিয়ে জলের জৈব উৎপাদান কতটা বোঝা যায়। ‘বিওডি’ বেশি থাকার অর্থ— জলে পচনশীল, জৈব বস্তু রয়েছে। তা যেমন গাছের ডালপালা, পাতা হতে পারে তেমনই জীবজন্তুর মৃতদেহ, মাছের দেহ হতে পারে। যা জলের সঙ্গে মিশে রয়েছে। ওই সমস্ত জৈব পদার্থের উপরে কিছু ‘অ্যারোবিক ব্যাকটেরিয়া’ থাকে, যা জৈব পদার্থগুলোকে পচায়। তার জন্য অক্সিজেন দরকার। তারা ওই অক্সিজেন জলের দ্রবীভূত অক্সিজেন থেকে নেয়। যত বেশি পচন হবে, তত ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়বে। আবার তাতে পচনও বেশি মাত্রায় হবে। জলের অক্সিজেন ওই ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করতে থাকবে। অক্সিজেন কমতে থাকবে। তাই জলের ‘বিওডি’ পরীক্ষা করে দেখা হয়। পদ্ধতি মেনে যেমন ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে পাঁচ দিন করে ব্যাকটেরিয়া ‘ইনকিউবেশন’ দেখা হয় অক্সিজেন কতটা দরকার হয় প্রতি লিটার জলে।
যত কম ‘বিওডি’ থাকবে, জল তত বেশি পরিস্রুত। যত বেশি ‘বিওডি’, জল তত বেশি দূষিত। ‘বিওডি’ বেশি থাকলে শরীরের পক্ষে খারাপ। কারণ, তত বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকবে। ওই জল খেলে বিভিন্ন ধরনের ডায়রিয়া,
গ্যাসট্রোএন্টেরাইটিস, বমি, পায়খানা, আন্ত্রিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। তা থেকে জন্ডিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তা থেকে নানা ধরনের চর্ম রোগ, যকৃতের অসুখ হতে পারে। জ্বর, পেটের রোগ হবে। তাই জল পরিস্রুত রাখতে হয়। ‘বিওডি’-র মাত্রা শূন্য রাখতে হয়। জৈব পদার্থ জলে যত কম থাকবে, ‘অ্যারবিক ব্যাকটেরিয়া’ তত কম হবে। জল ফুটিয়ে নিলে ‘মাইক্রো অর্গানিজ়ম’ মরে যাবে। জৈব পদার্থগুলি থেকে যাবে। ফের পচন শুরু হবে। কিছু ব্যাকটেরিয়া জল ফুটোলেও মরে না—‘হিট রেজ়িস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া’। সেগুলি আবার বাড়বে।
সে কারণে ‘বিওডি’ বেশি থাকা জলপানে নিষেধ করা হচ্ছে। কারও ওই জল খেয়ে শরীর খারাপ মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। তা ছাড়া, ‘ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া’ রয়েছে। মানুষের মলে থাকে। ‘ই কোলাই’, ‘সিউডোমোনাস’-এর মতো ব্যাকটেরিয়াগুলি।
সব চেয়ে বেশি থাকে ‘ই কোলাই’। জলে সেগুলোর পরিমাণ জানা যায়। জলে ‘কলিফর্ম’ বেশি হলে, সে জলপানও উচিত নয়।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, শিলিগুড়ি