ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহকে দিনহাটার পুরসভার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী করে নির্বাচনে প্রচার শুরু করল বামফ্রন্ট। শুক্রবার জেলা সিপিএমের দফতরে বামফ্রন্ট নেতৃত্বের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠক করে ওই কথা জানান সিপিএমের জেলা সম্পাদক তারিণী রায়।
জেলার অন্য তিন পুরসভাতেও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে জেলা বামফ্রন্টের প্রথম সারির তিন নেতাকে। তারিণী বাবু জা নান, কোচবিহার পুরসভায় জেলা সিপিএম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা মহানন্দ সাহা, তুফানগঞ্জে বিদায়ী চেয়ারম্যান সুভাষ ভাওয়াল এবং মাথাভাঙা পুরসভায় বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ চৌধুরীকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, “উদয়নবাবু সহ চারজন দলকে পুরসভায় নেতৃত্ব দেবেন। অর্থাৎ তারাই চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। এবারে বামেদের ঐক্য আরও জোরদার হয়েছে।”
উদয়নবাবু বলেন, “রাজ্য জুড়ে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাতে আমি মনে করি প্রথম সারির নেতাদের ভোটের ময়দানে নেমে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া উচিত। তাহলে কর্মী-সমর্থকরা চাঙ্গা হবেন। জনসংযোগে ঘাটতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বাম নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে তা পূরণ হবে।” উদয়নবাবু সহ জেলার প্রথম সারির নেতারা প্রার্থী হওয়ায় সেই প্রভাব খানিকটা হলেও পুরভোটে পড়বে বলে করছেন রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেও।
শাসক দল বা বিজেপি কেউ অবশ্য বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “উদয়ন গুহ দাঁড়াতেই পারেন। তাতে কোনও প্রভাব পড়বে না। বামেদের ৩৪ বছরে যা হয়েছে, মানুষ সবই জানে। উদয়নবাবুদের ভূমিকাও দিনহাটার মানুষ জানেন। কোনও উন্নয়নের কাজ করেননি।’’ বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “বামেদের মানুষ আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে।”
দলীয় সূত্রের খবর, জেলায় গত কয়েকটি নির্বাচনে বামেদের ক্রমশ ক্ষয়ে হতাশ হয়েছেন পড়েছেন কর্মীরা। দিনহাটা, মাথাভাঙা এবং তুফানগঞ্জ পুরসভায় ক্ষমতায় রয়েছেন বামেরা। শুধু কোচবিহার পুরসভাতে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। বামেরা ওই পুরসভাগুলিতে ক্ষমতায় থাকলেও গত কয়েক বছরে তৃণমূল প্রত্যেকটি জায়গায় তাদের শক্তিবৃদ্ধি করেছে। শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বিজেপিও। এই অবস্থায় পুরসভাগুলি দখলে রাখতে তৎপর হয়ে উঠেছে বামেরা। সে কারণেই উদয়নবাবুকে প্রার্থী করা হয়েছে দিনহাটা পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে।
ওই পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান চন্দন ঘোষকে ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। কোচবিহারে পুরসভায় মহানন্দা সাহা ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভোটে লড়ছেন। তিনি ওই ওই ওয়ার্ড থেকে গত পুরভোটেও জয়ী হয়েছেন। তুফানগঞ্জে ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছেন সুভাষ ভাওয়াল, মাথাভাঙায় ১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে অরুণ চৌধুরীকে প্রার্থী করা হয়েছে। ৪ পুরসভার ৬০টি আসনের মধ্যে সিপিএম ৩৭ টি, ফরওয়ার্ড ব্লক ২১ টি, সিপিআই ১টি, আরএসপি ১ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। এদিন ৫৩টি আসনের তালিকা ঘোষণা করা হয়। বাকি ৭টি আসনের প্রার্থী দু’দিনের মধ্যে জানানো হবে বলে জানান বামফন্ট নেতৃত্ব। বিরোধীদের অবশ্য কটাক্ষ, বামেরা সব ওয়ার্ডে প্রার্থীই খুঁজে পায়নি।