‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’র প্রচারে ‘অ্যাডভেঞ্চার হিল স্টেশন’ কালিম্পং।
দীর্ঘদিনের দাবি থাকলেও দার্জিলিঙের পাশে সমান কদর পাচ্ছিল না কালিম্পং। নতুন জেলা হওয়ার পরেও বিভিন্ন স্তরে চেষ্টা শুরু হয়। অবশেষে, এপ্রিলের শুরুতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে রাজ্যের তরফে পর্যটন মন্ত্রকে কালিম্পং নিয়ে ভাবতে অনুরোধ করা হয়। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পর্যটন মন্ত্রকের প্রচার অভিযান শুরুর দুই দশক পরে গত রবিবার দেশের ‘অ্যাডভেঞ্চার হিল স্টেশন’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে কালিম্পংকে৷ সেই সঙ্গে ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’র প্রচারেও অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে কালিম্পংকে। এ নিয়ে জোরকদমে প্রচারও শুরু হতে চলেছে।
মন্ত্রক সূত্রের খবর, সম্প্রতি দেশের জনপ্রিয় হিল স্টেশনগুলির সঙ্গে পাহাড়ি শহরকেও তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাতে দার্জিলিং, মানালি, সিমলার মতো জনপ্রিয় পাহাড়ি শহরের সঙ্গে আরও নতুন হিল স্টেশন বাছাই করা শুরু হয়। এতে মেঘালয়ের শিলং, হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালা, মহারাষ্ট্রের মাথেরান-সহ একাধিক শহরকে প্রাথমিক ভাবে বাছা হয়। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পংকে নেওয়া হয়েছে। আরও কিছু পাহাড়ি শহরকে বিবেচনার মধ্যে রাখা হয়েছে।
পর্যটন মন্ত্রকের এক যুগ্ম সচিব জানান, এ দেশে কিছু অতি-জনপ্রিয় হিল স্টেশনেই দেশবিদেশের পর্যটকেরা ভিড় করেন। এর পাশাপাশি, আরও কয়েকটি হিল স্টেশনে পর্যটকেরা গেলেও তা ততটা জনপ্রিয় নয়। দেশের অনেক রাজ্যের ক্ষেত্রেই বিষয়টি প্রযোজ্য। এ বার সেই সব কম জনপ্রিয় পাহাড়ি পর্যটনস্থলকে সামনে আনার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্তরে প্রচারে হিল স্টেশনগুলির বিশেষত্ব তুলে ধরা হচ্ছে। কালিম্পংকে ঘিরে ‘অ্যাডভেঞ্চার টুরিজ়ম’ এবং মাথেরানে ‘অটোমোবাইল-ফ্রি হিল স্টেশন’ জাতীয় প্রচার করা হচ্ছে।’’
মন্ত্রকের অফিসারেরা জানান, দার্জিলিং চা, ইতিহাস, টয় ট্রেন, মনোরম আবহওয়া, টাইগার হিল— সব মিলিয়েই ‘প্যাকেজ’। টাইগার হিলের প্যাভেলিয়নের কাজ এখনও শেষ হয়নি। কালিম্পং পরিসরে কিছুটা ছোট হলেও ,তাকে ঘিরে নানা ঘোরার এলাকা রয়েছে। রয়েছে সুন্দর গলফ কোর্স, কিছুটা দূরে ডেলোর মতো পর্যটনকেন্দ্র। নীচে তিস্তায় রাফ্টিং, উপরে প্যারাগ্লাইডিং-সহ নানা ‘অ্যাডভেঞ্চার টুরিজ়ম’-এর বন্দোবস্তও রয়েছে। এ বার জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে ‘অ্যাডভেঞ্চার টুরিজ়ম’। সম্মেলনে শিলিগুড়ি এবং কার্শিয়াঙে দু’টি আলাদা বৈঠকও হয়। সেখানেই মূলত কালিম্পং আর ডুর্য়াসের বিষয়টি সামনে আসে।
পাহাড়ের পাশাপাশি, রাজ্যের সমতলে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বিষ্ণুপুরের মতো কিছু এলাকা নিয়ে পর্যটন মন্ত্রক কাজ শুরু করেছে। এই শহরগুলিও প্রচারে উঠে আসবে বলে জানা গিয়েছে। মন্ত্রকের এই ভাবনায় খুশি পর্যটন সংগঠনগুলি। ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট’ সংস্থার সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘পর্যটন মন্ত্রকের প্রচারে কোনও এলাকা ঢুকে পড়লে সেখানকার পর্যটন প্রসারে গতি আসতে বাধ্য।’’