উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব। ফাইল ছবি।
অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করতে না পেরে মৃত সন্তানের দেহ ব্যাগে ভরে ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে নিজের গ্রামে ফিরতে হয়েছে কালিয়াগঞ্জের অসীম দেবশর্মাকে। সেই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কেন হাসপাতাল শিশুর দেহ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করল না, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। তার প্রেক্ষিতে বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব জানালেন, ‘নিশ্চয়যান’-এর অ্যাম্বুল্যান্স সাধারণত শবদেহ বহন করে না। তবে জরুরি পরিস্থিতিতে এ বার মৃতদেহ বহন করবে। পাশাপাশি, হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের ‘দৌরাত্ম্য’ নিয়েও কড়া বার্তা দিলের শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম।
বুধবার হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকের পর গৌতম বলেন, ‘‘যা ঘটেছে, তা কখনওই কাম্য নয়। সম্পূর্ণ যোগাযোগের অভাবেই ঘটনাটি ঘটেছে। আগামী দিনে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার জন্য কিছু পদক্ষেপ করেছি।’’ মেয়র জানান, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৪টি নিশ্চয়যান রয়েছে। কিন্তু সেগুলি এত দিন মৃতদেহ বহন করত না। তবে এখন থেকে প্রয়োজন ভিত্তিতে তারা মৃতদেহ বহন করবে। এ ছাড়াও শিলিগুড়ি পুরনিগমের কাছে দু’টি শববাহী গাড়ি রয়েছে। সেগুলি শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেরও কাজে লাগানো হবে। তার খরচ পুরনিগম এবং রোগী কল্যাণ সমিতি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করবে। গৌতম নিজেও একটি শববাহী গাড়ি মেডিক্যাল কলেজের হাতে তুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে একটির ব্যবস্থা করছি। জেলাশাসককে অনুরোধ করেছি, উনিও একটি শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করবেন।’’
রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে গৌতম ছাড়াও ছিলেন হাসপাতালের সুপার, প্রিন্সিপাল এবং এসডিও। সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘আপাতত নিশ্চয়যানের গাড়িগুলোকে জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা হবে। শতাধিক অ্যাম্বুলেন্স মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে থাকে। তাদের নির্দিষ্ট একটি তালিকার আওতায় আনা হবে। চিহ্নিতকরণের জন্য মেডিক্যাল কলজের স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হবে গাড়িগুলোতে। একটি নির্দিষ্ট সময়ে ৩০টি অ্যাম্বুলেন্সই ক্যাম্পাসের মধ্যে থাকতে পারবে।’’ গৌতমও বলেন, ‘‘কোনও পরিবারের অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড়ের সামর্থ্য না থাকলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার ব্যবস্থা করে দেবেন। পাশাপাশি মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে বাইরের অ্যাম্বুলেন্সের দৌরাত্ম কমিয়ে আনা হবে। জায়গা চিহ্নিত করে ঘেরাটোপের মধ্যে ৩০টি অ্যাম্বুল্যান্সের অনুমতি দেওয়া হবে। মেডিক্যাল কলেজের ভিতর অযথা গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্স বা টোটোর ভিড় করতে দেওয়া যাবে না।’’