ভাই আসিফ এবং দাদা আরিফ। নিজস্ব চিত্র।
মালদহ জেলার কালিয়াচকে একই পরিবারের চার সদস্যের খুন হওয়ার খবর সামনে আসতেই উত্তাল হয়েছে রাজ্যে। যত বেলা গড়িয়েছে তত উন্মোচিত হচ্ছে খুন সংক্রান্ত রহস্য। শনিবার সকাল থেকে পুলিশি জেরার পর জানা গেল, শুধু বাবা, মা, বোন এবং ঠাকুমা নয়, দাদা আরিফকেও একই ভাবে খুনের চেষ্টা করেছিল আসিফ। কিন্তু আসিফের কবল থেকে তিনি যে ভাবে নিজের প্রাণ বাঁচিয়েছেন বলে দাবি করেছেন, তা হার মানাতে পারে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও।
২৮ ফেব্রুয়ারির সেই দুপুরে মা ইরা বিবি, বাবা জাওয়াদ আলি, বোন আরিফা খাতুন এবং ঠাকুমা আলেকজান খাতুনের পাশাপাশি আরিফের ফলের রসেও মেশানো হয়েছিল ঘুমের ওষুধ। তা খেয়ে অচৈতন্যও হয়ে পড়েছিলেন আরিফ। এর পর তাঁর দেহ ফেলা হয়েছিল জলের ট্যাঙ্কে। পাশাপাশি তাঁর মুখে আসিফ লিউকোপ্লাস্ট বেঁধে দিয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছেন আরিফ। কিন্তু জলের ট্যাঙ্কে ফেলার পর না কি আলগা হয়ে যায় লিউকোপ্লাস্টের বাঁধন। এর পর রীতিমতো ‘লড়াই’ করে প্রাণ বাঁচানোর কথা পুলিশকে জানিয়েছেন আরিফ। যদিও পুলিশ তাঁর বয়ানে অনেক রকমের অসঙ্গতি পেয়েছে।
লিউকোপ্লাস্টের বাঁধন আগলা হওয়ার পর ২৮ ফেব্রুয়ারি আসিফের সঙ্গে তাঁর মারামারি হয়েছিল বলে দাবি করেছেন আরিফ। তখন ভাই আসিফের হাত থেকে বাঁচতে কোনও মতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান তিনি। জেরার সময় পুলিশের কাছে আরিফ দাবি করেছেন, এর পর কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। ৩ মাসের বেশি সময় কলকাতায় কাটানোর পর শুক্রবার পুলিশের কাছে ভাই আসিফের নামে অভিযোগ জানান।
কিন্তু আরিফের এই বয়ান কতটা ঠিক তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, অসঙ্গতি রয়েছে বলেই আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরিফকে আটক করা হয়েছে। আরিফের বয়ান শুনে অনেক প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে। এত কিছু জানার পরও ২৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশের কাছে যাননি আরিফ? কেন তিনি কলকাতা চলে গেলেন? কেন প্রতিবেশীদের জানালেন না গোটা ঘটনা? এত দিন তিনি কেন আড়াল করে রাখলেন গোটা ঘটনা? এ সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।