হস্টেলে সহবাসে প্রশ্নে নজরদারি

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হস্টেলের ঘরে সহবাসের অভিযোগে ১৪ দিনের জেল হেফাজত হল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক জুনিয়র চিকিৎসকের। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির অতিরিক্ত দায়রা আদালতে তোলা হলে বিচারক ওই নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৪২
Share:

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হস্টেলের ঘরে সহবাসের অভিযোগে ১৪ দিনের জেল হেফাজত হল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক জুনিয়র চিকিৎসকের। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির অতিরিক্ত দায়রা আদালতে তোলা হলে বিচারক ওই নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তের ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। তরুণীর পরিবারের দাবি, অভিযুক্ত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ছাত্র। সে কারণে ডাক্তারি পরীক্ষা অন্যত্র করানোর দাবি তুলেছেন পরিবারের লোকেরা। তাঁদের সন্দেহ, তা না হলে অভিযুক্ত সুবিধা পেতে পারে। পুলিশ অবশ্য মেডিক্যালেই ওই পরীক্ষা করিয়েছে বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়।

কলেজের হস্টেলের ঘরে বহিরাগত তরুণীকে এনে সহবাসের মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠায় উদ্বিগ্ন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এদিন অধ্যক্ষ সমীরকুমার ঘোষ, ডিন (স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স), সুপার তথা ভাইস-প্রিন্সিপালদের নিয়ে বৈঠক করেন। কলেজের হস্টেল সুপারদের নজর রাখতে বলা হয়েছে। তাঁদের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের সতর্ক করেছেন কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত ছাত্র ইন্টার্নশিপ করছেন। গ্রেফতার হওয়ায় তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘বহিরাগতকে এনে এ ভাবে হস্টেলে যে রাখছে সেই ছাত্র বা জুনিয়র চিকিৎসক অন্যায় করছে, যে থাকছে সেও অন্যায় করছে।’’ ওই ছাত্র ছাড়া পেলে তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

Advertisement

সরকারি আইনজীবী সুদীপ রায় বাসুনীয়া জানান, ছাত্রটিকে ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তিনি বলেন, ‘‘অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী দাবি করছিলেন আগে দুই জনের মধ্যে ভাল সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি তার অবনতি হয়।’’

এই ঘটনা সামনে আসায় হস্টেলের পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। সন্ধ্যার পর হস্টেলগুলির পরিবেশ নিয়ে অভিয়োগ তুলেছেন হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মীদের একাংশ। কলেজ সূত্রেই জানা গিয়েছে, ইন্টার্ন ওই ছাত্রটি সিনিয়র বয়েজ হস্টেলে থাকতেন। সেখানে ছাত্ররা প্রত্যেকেই আলাদা ঘরে থাকেন। পুজোর ছুটির পর হস্টেলগুলিতে এখনও সব ছাত্র আসেনি। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তরুণীকে হস্টেলে এনে রাখা হয়েছিল বলে কর্তৃপক্ষের একাংশ মনে করছেন।

ইন্টার্নদের জন্য আলাদা হস্টেল রয়েছে জরুরি বিভাগের কাছে। ছাত্রটি সেখানে না থেকে সিনিয়র বয়েজ হস্টেলে থাকতেন কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ডিন মৈত্রেয়ী নন্দী কর বলেন, ‘‘যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিন্দনীয়। হস্টেলের ছাত্রদেরও সতর্ক করা হয়েছে।’’ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এবং হাউজ স্টাফদের হস্টেলের সমস্যা থাকায় ইন্টার্ন হস্টেলে তাঁদের অনেককে থাকতে হয়। সমস্ত ইন্টার্নদের তাদের হস্টেলে জায়গা দেওয়া যায় না। তবে পিজি পড়ুয়াদের জন্য আলাদা হস্টেল তৈরি হচ্ছে। ওই হস্টেল তৈরি হলে সমস্যা অনেকটা মিটবে। মেডিক্যালে প্রোগ্রেসিভ জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অভীক দে বলেন, ‘‘অনভিপ্রেত ঘটনা। ওই ছাত্রটি বা তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’

বুধবার ভোরে শক্তিগড় এলাকায় অভিযোগকারী তরুণীর সঙ্গে ছাত্রটিকে দেখেন এলাকার লোকেরা। তরুণীর সঙ্গে তার গোলমাল হচ্ছিল। রাতে তরুণী অভিযোগ জানালে পুলিশ তখনই ছাত্রটিকে গ্রেফতার করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement